সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রী নিবাসে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করেছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ ঘটনায় সিলেটে তোলপাড় আর নিন্দার ঝড় উঠেছে।
পুলিশ গুরুতর অবস্থায় স্ত্রীকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করেছে। মধ্যরাত পর্যন্ত পুলিশ অভিযানে থাকলেও কোনো ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
পুলিশ জানায়- শুক্রবার সন্ধ্যায় এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে বেড়াতে আসেন এক দম্পত্তি। রাত ৯ টার দিকে কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী স্বামীকে মারধোর করে স্ত্রীকে ছিনিয়ে মহিলা ছাত্রী নিবাসে নিয়ে যায়। পরে স্ত্রীর পিছু পিছু স্বামী ছাত্রাবাসে পৌছলে তাকে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এক পর্যায়ে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে আসা ওই বধুকে ৫-৬ জন ছাত্রলীগ কর্মী পালাক্রমে ধর্ষন করে।
এসময় তাদের সাথে থাকা ৯০ টি মডেলের একটি কারও ছিনিয়ে নিয়ে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে পৌছলে ছাত্রলীগ কর্মীরা পালিয়ে যায়।
গুরুতর অবস্থায় ওই বধুকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। স্ত্রীর সঙ্গে হাসপাতালেও রয়েছেন স্বামী।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) জ্যোর্তিময় সরকার জানিয়েছেন- পুলিশ গিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে ছাত্রী নিবাস থেকে উদ্ধার করে। এরপর স্ত্রীকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনার পরপরই পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ধর্ষক ছাত্রলীগ কর্মীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে- নব নির্মিত ওই ছাত্রী নিবাসটি ফাকা রয়েছে। এ কারণে সেখানে বখাটেরা রাতে আড্ডা দিতো।
এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ সালেহ আহমদ জানান, এরকম ঘটনার কথা তিনি শুনেছেন। বিষয়টি পুলিশ দেখছে।
শাহপরাণ থানার ওসি কাইয়ুম চৌধুরী জানান, তাদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এমসি কলেজের হোস্টেল সুপার জামাল উদ্দিন জানান, শুনেছি স্বামী-স্ত্রীকে আটক রাখে হোস্টেলে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেছে।
এদিকে-ধর্ষক ছাত্রলীগ কর্মীরা সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের রঞ্জিত গ্রুপের সদস্য বলে জানা গেছে। তারা করোনাকালে ফাকা হোস্টেলে আড্ডার পাশাপাশি মাদক সেবন করতো বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এ নিয়ে বার বার অভিযোগ জানালেও কলেজ কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।
সিলেটের প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত এমসি কলেজের ১২৮ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী এই ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীসহ সচেতন নাগরিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
