মিয়ানমারে গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাকায় রাখাইনদের বিক্ষোভ

মিয়ানমারে গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাকায় রাখাইনদের বিক্ষোভ

মিয়ানমারের আরাকানে জাতিগত রাখাইনদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে রাখাইন কমিউনিটি অফ বাংলাদেশ। তাদের অভিযোগ, আরাকান রাজ্যে হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো বিচার পাচ্ছে না এই সম্প্রদায়টি।

রবিবার সকালে তারা জাদুঘরের সামনে এই সমাবেশ করে। প্রতিবাদ সমাবেশে সংগঠনটির আহব্বায়ক ক্যাঞিং বলেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সুকৌশলে এবং পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন গ্রামে ঢুকে নির্যাতন, ধর্ষণ, লুণ্ঠন গুলিবর্ষণসহ বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কোনো আইনের তোয়াক্কা না করে মানবতাবিরোধী হত্যাযজ্ঞ ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে বসবাসরত রাখাইন সম্প্রদায়ের এই নেতা বলেন, মিয়ানমার সরকার আর্ন্তজাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোকে রাখাইনে ঢুকতে না দেয়ায় সেখানে খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। বার্মিজ সরকারের অত্যাচার-নির্যাতন আজ থেকে নয়। সেই ১৭৮৪ খ্রিষ্টাব্দে থেকে কুখ্যাত বার্মিজ সমন্বয়ক ওয়ানের নেতৃত্বে তৎকালীন রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী জনগণকে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিলুপ্ত করার উদ্দেশ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, এমনকি কোনো ধর্মীয় স্থাপনা পর্যন্ত রক্ষা পায়নি। যা আজও চলমান। সমাবেশ থেকে অন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ক্যাঞিং বলেন, এরপরও যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে রাখাইন জনগণ পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

এই সমাবেশে যোগ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গণহত্যার ঘটনায় ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে গাম্বিয়া যখন অভিযোগ করেছে, তখন তার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও রাখাইনে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দাবি করছে। ইনডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমার- আইআইএমএম এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
আন্তর্জাতিক মহলের পক্ষ থেকে মিয়াননমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যদের মধ্যে রাখাইন কমিউনিটি অব বাংলাদেশের সভাপতি মাং শাইরি, মুখপাত্র থং ইউ, রাখাইন স্টুডেন্টস অ্যাসোসিশনের সভাপতি আবু প্লেস সমাবেশে বক্তব্য দেন।

উল্লেখ্য কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, ঢাকা, বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার সাত শতাধিক রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষ এই মানববন্ধনে অংশ নেন। এদের মধ্যে রাখাইন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বশীল নেতৃত্ব, ভাগ্নেগণ, মহিলা ও শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন।