মৃত চিকিৎসকের নামে টেস্ট রিপোর্ট দিচ্ছিল গাড়িচালক!

মৃত চিকিৎসকের নামে টেস্ট রিপোর্ট দিচ্ছিল গাড়িচালক!

মৃত চিকিৎসকের স্বাক্ষরে প্যাথলজিক্যাল টেস্ট রিপোর্ট দেয়ার ঘটনায় রাজধানীর শ্যামলীর হাইপোথাইরয়েড সেন্টার সিলগালা করে দিয়েছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া এখানকার দুই কর্মচারী সোহেল রানা ও রাসেলকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। সেখানে মৃত এক চিকিৎসকের স্বাক্ষর করা অসংখ্য কাগজও পাওয়া গেছে।

এছাড়া মোহাম্মদপুর বাবর রোডের সন্ধি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে মাহমুদুল হাসান আপেল (২৮) ও রাজীব সরকার (২৬) নামের দুইজনকে ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটিকে দুই লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।

ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল টেস্টে ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে শনিবার সকালে শ্যামলীতে অভিযান চালায় র‌্যাব। প্রথমেই হাইপোথাইরয়েড সেন্টারে যায় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেখানে অসংখ্য রিপোর্ট পাওয়া যায় করোনায় মৃত চিকিৎসক অধ্যাপক মনিরুজ্জামানের নামে সই করা। এই চিকিৎসক গত ৩ মে করোনায় মারা গেছেন। এছাড়া অধ্যাপক ডা. মঞ্জুর হাসানের স্বাক্ষর দেয়া অসংখ্য ব্ল্যাংক রিপোর্টও পাওয়া গেছে।

র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম জানান, মৃত চিকিৎসকের নামে ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। পরে দুই কর্মচারীকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিক আবদুল বাকের পলাতক রয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে এবং এর মালিকের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়েরের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সারোয়ার আলম বলেন, এ প্রতিষ্ঠান রিজেন্ট কিংবা জেকেজিকেও হার মানিয়েছে। ১০ বছর ধরে ল্যাব পরিচালনা করছে হাইপোথাইরয়েড সেন্টার। থাইরয়েডের নানা রিপোর্টসহ হেপাটাইটিস, ব্লাড ক্যানসারসহ নানা ধরনের পরীক্ষা করা হতো এখানকার ল্যাবে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীরা বলছেন দুই-একটা টেস্ট করা হলেও বাকিগুলো দেয়া হতো অনুমান করে।

সারোয়ার আলম বলেন, অন্য সময় দেখতাম- চিকিৎসকের পরিবর্তে টেকনেশিয়ান স্বাক্ষর করেছে। এখানে এসে জানলাম চিকিৎসকের পরিবর্তে তার ড্রাইভার স্বাক্ষর করেছে। প্রফেসর ডা. মনিরুজ্জামান মে মাসে মারা গেলেও ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত তার নামে রিপোর্ট স্বাক্ষর করা হয়েছে। এরপর অভিযান চালানো হয় বাবর রোডের সন্ধি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে রোগীদের প্রতারণার মাধ্যমে অতিরিক্ত টেস্ট করার অভিযোগ পাওয়া যায়। এখানে কোনো ল্যাব টেকনেশিয়ান না থাকলেও বিভিন্ন টেস্টের রিপোর্ট দেয়া হতো। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী বাগিয়ে আনার অভিযোগে সেখানকার দুই কর্মচারীকে ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। জনশক্তি না থাকায় প্রতিষ্ঠানটিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। র‌্যাব-২ এর সহযোগিতায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এমজে/