অ্যামনেস্টির প্রতিবেদন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে খর্ব হচ্ছে বাক স্বাধীনতা

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে খর্ব হচ্ছে বাক স্বাধীনতা

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, বাংলাদেশে দুর্নীতি ও সরকারের করোনা ভাইরাস মোকাবেলা নিয়ে প্রতিবেদনের জন্য সাংবাদিকরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বাক-স্বাধীনতা খর্ব করতে ২০১৮ সালে প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিভিন্ন ধারা ব্যবহার করা হয়েছে। পুলিশ ও অন্যান্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা বিচারবর্হিভূত হত্যকাণ্ড চালিয়েছে। নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বেড়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী অধিকারকর্মীরা ধর-পাকড়ের শিকার হয়েছেন।

২০২০ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। বুধবার ১৪৯টি দেশের মানবাধিকার নিয়ে অ্যামনেস্টির প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সরকারি হিসেবে গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯০০ এর বেশি মামলা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় ১ হাজার অভিযুক্ত ও ৩৫৩ জন আটক হয়েছেন। হামলার শিকার হয়েছেন অন্তত ২৪৭ সাংবাদিক। একই সময়ে এই আইনের ১৪৪ ধারা ব্যবহার করে ১৭টি সভা-সমাবেশ বন্ধ করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে হত্যার শিকার হয়েছেন ২২২ জন। এদের মধ্যে ১৪৯ জন গ্রেপ্তারের পূর্বে ও ৩৯জন গ্রেপ্তারের পরে নিহত হন। অন্যরা নির্যাতন এবং অন্যান্য কারণে প্রাণ হারান।

গতবছর নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ২ হাজার ৩৯২টি। এর মধ্যে ১ হাজার ৬২৩টি ধর্ষণের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। ৪৪০ জন নারী ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে ২৮৫টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। ৯৯ জন গণগ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন, ১০৪টি বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে, স্থানীয় সংঘর্ষে ৬৯ জন আদিবাসী নিহত হয়েছেন, ৫০ জনকে অপহরণ করা হয়েছে, ৮২টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়, বৈশ্বিক চিত্র তুলে ধরে নাগরিক অধিকার খর্ব করতে এবার বেশিরভাগ দেশের সরকার করোনা ভাইরাসকে 'অস্ত্র' হিসেবে ব্যবহার করেছে। এর মধ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনে শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে মিশর, লেবানন, ব্রাজিল, মেপিকো, বুলগেরিয়া, মিয়ানমার ও কেনিয়া।