পরী মণি-সাকলায়েনের নতুন ভিডিও ফাঁস

পরী মণি-সাকলায়েনের নতুন ভিডিও ফাঁস

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) পশ্চিম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. গোলাম সাকলায়েন শিথিল ও চিত্রনায়িকা পরী মণির নতুন ভিডিও ফাঁস হয়েছে। ১ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দুইজনকে জন্মদিনের কেক কেটে উদযাপন করতে দেখা গেছে।

ভিডিওতে দেখা গেছে, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগের সাবেক এডিসি সাকলায়েন একটি কালো রঙের শার্ট পরা। পরী মণি ছিলেন গোলাপি ও কালো রঙের শাড়ি পরা। তাঁরা দুজন বসেছিলেন একটি রেস্তোরাঁয়। তাঁদের আশেপাশে ছিল কালো ও নীল রঙের বেশকিছু বেলুন। তাঁদের টেবিলে রাখা কাঁচের দুটি গ্লাসে ছিল পানীয় এবং একটি কেক। কেকটি ছিল নীল ও কালো রঙের। কেকের ওপরে লেখা ছিল, ‘হেপি বার্থডে মাই ম্যান’। গোলাম সাকলায়েন ও পরী মণি দুজন হাতে হাত ধরে একটি ছুরি নিয়ে নীল রঙের একটি কেক কাটেন। এরপর পরী মণি একটি পিস কেক কেটে সাকলায়েনকে খাইয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে একটি চুমু দেন পরী মণি। এরপর সাকলায়েনও পরী মণিকে কেক খাইয়ে দেন। কেক খাইয়ে দেওয়ার পর দুজন আবার দুই টুকরা কেক কাটেন। এক টুকরা কেক নিয়ে খাওয়া শুরু করেন সাকলায়েন। আরেক টুকরা কেক ছিল পরী মণির হাতে। পরী মণি সেই কেক সাকলায়েনকে খাইয়ে দেন। সাকলায়েনও পরীর হাত ধরে তাঁকেও একটু খাইয়ে দেন। এরপর পরী মণি তাঁর মুখে কেকের টুকরা নিয়ে সাকলায়েনকে খাইয়ে দেন। এ সময় পরী মণিকে কেকের টুকরা হাতে নিয়ে উল্লাস করতে দেখা যায়।

শেষ দৃশ্যে দেখা যায়, পরী মণি ভিডিও ধারণ করা ব্যক্তিকে কেক খাইয়ে দেন।

এর আগে গোলাম সাকলায়েন ও পরী মণির আরেকটি ভিডিও ফাঁস হয়। ১ আগস্ট রাতের ওই ফুটেজে দেখা যায়, রাত ৮টার দিকে রাজারবাগের মধুমতি ভবনের সামনে থামে পরী মণির হ্যারিয়ার গাড়ি। ওই ভবনের দশম তলায় সাকলায়েনের সরকারি ফ্ল্যাট। সাকলায়েন নিজে নেমে এসে পরী মণিকে ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর সাকলায়েনের বাসায় প্রবেশ করেন পরী মণির খালাতো বোন ও তাঁর স্বামী। পরে রাত ২টার দিকে পরী মণিসহ তিনজনই বের হয়ে যান বাসা থেকে।

ওই ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর সাকলায়েনকে ডিবি থেকে সরিয়ে ডিএমপির পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) পশ্চিম বিভাগে বদলি করা হয়। এ ঘটনায় গত রোববার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে পুলিশ সদর দপ্তর।

পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ শাখার এআইজি মো. সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গোলাম সাকলায়েন এবং নায়িকা পরী মণির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে তদন্ত করতে পুলিশ সদর দপ্তর তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্যরা এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করে ঘটনা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবেন। ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’

এই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি (ট্রেনিং) মিয়া মাসুদ করিম। অন্য দুই সদস্য হলেন ডিএমপির উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন সেন্টারের উপকমিশনার (ডিসি) হামিদা পারভীন ও অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার (ফরেনসিক) রুমানা আক্তার।

এ ব্যাপারে গত শনিবার ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রধান) এ কে এম হাফিজ আক্তার এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘যেহেতু পরী মণির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের মতো একটি অভিযোগ এডিসি গোলাম সাকলায়েনের বিরুদ্ধে এসেছে, সেহেতু ডিবি থেকে তাঁর সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। তিনি এখন ছুটিতে রয়েছেন। তাঁর মুঠোফোনটিও ডিবির কাছে জমা রয়েছে।’

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গত ১৩ জুন উত্তরা বোট ক্লাবে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের বিরুদ্ধে মামলা করেন পরী মণি। ওই ঘটনায় নাসির উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। ওই সময় পরী মণিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয় ডিবি কার্যালয়ে। তখনই পরীর সঙ্গে প্রথম পরিচয় সাকলায়েনের। সাকলায়েন ৩০তম বিসিএসের কর্মকর্তা। গত ১৮ জুলাই ছিল তাঁর জন্মদিন। ধারণা করা হচ্ছে, সেদিন তিনি পরী মণির সঙ্গে জন্মদিনের কেক কেটে উদযাপন করেন।

এদিকে গত ৪ আগস্ট রাজধানী বনানীর বাসা থেকে চিত্রনায়িকা পরী মণিকে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। পরদিন তাঁর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে আইনে মামলা করা হয়। এরপর তাঁকে চার দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। সেই রিমান্ড শেষে পরী মণিকে আজ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।