সরকারি ফ্ল্যাটে উঠতে চায় না বস্তিবাসী

সরকারি ফ্ল্যাটে উঠতে চায় না বস্তিবাসী

সরকারের দেয়া ফ্ল্যাটে নির্ধারিত ভাড়ার বিনিময়ে উঠতে চান না বস্তিবাসীরা। হয় মালিকানা হস্তান্তর, না হয় ভাড়া কমানোর দাবি তাদের। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ৩শ পরিবারের মাঝে ভাড়াচুক্তি তুলে দেন জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সংসদ সদস্য বলছেন, এলকাবাসীর দাবি তিনি তুলে ধরবেন সংসদ অধিবেশনে।

রাজধানীর মিরপুর-১১ নম্বর বাউনিয়া বেড়িবাঁধের কলাবাগান বস্তি। কামাল-মিম দম্পতির এই ঘরের আয়তন, সর্বোচ্চ ২শ বর্গফুট। এখানে যার ভাড়া, হাজার-পনেশো টাকার মধ্যে। সাথে আছে, গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ বিল। বস্তির পাশেই তাদের জন্য বহুতল ভবন তৈরি করেছে সরকার। যেখানে ফ্ল্যাট রয়েছে ৫৩৩টি। এর মধ্যে ৬৭৩ বর্গফুটের ৪৬৮টি আর ৭২০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ৬৫টি। মাসে সাড়ে ৪ হাজার টাকা ভাড়ায় এরইমধ্যে দেয়া হয়েছে, ৩শ ফ্ল্যাটের ভাড়াপত্রও।

কিন্তু, এখন এই ফ্ল্যাটে উঠতে চান না তারা। তারা বলেন, চুক্তিতে চার হাজার ৫০০ টাকা ভাড়ার কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু গ্যাস, কারেন্ট, পানি ও সার্ভিস চার্জ মিলিয়ে আরও আসে পাঁচ হাজার টাকার মতো। তাহলে প্রতি মাসে আমাদের পরিশোধ করতে হবে সাড়ে নয় হাজার টাকা। এত টাকা পাব কোথায়?

কেউ কেউ আবার দাবি করছেন ফ্ল্যাটের মালিকানা দেয়ার। বলেন, এখানে যারা থাকি, বিনা ভাড়ায় থাকি। আমরা ভাড়া দিতে অভ্যস্ত নই। প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বুঝানো হয়েছে। আমাদের ফ্ল্যাট দিলেও ভাড়া কমাতে হবে। কিস্তির সুবিধা দিতে হবে। ফ্ল্যাটের মালিকানা দিতে হবে। ভাড়া দিয়ে তা পরিশোধ করব। যদি ফ্ল্যাটের মালিকানা না পাই, তাহলে অন্য সরকার এলে আমাদের বের করে দেবে। আমরা যাব কোথায়।

এরইমধ্যে বস্তিবাসীরা নিজেদের দাবি তুলে ধরেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ'র কাছে।

জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোঃ দেলওয়ার হায়দার জানান, বস্তিবাসীদের উন্নত জীবন দিতে সরকারের এই প্রকল্প। যাদের ভাড়াপত্র দেয়া হয়েছে ..তারা না উঠলে অন্য বস্তিবাসীদের ভাড়া দেয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী ৩ আগস্ট এক ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে মিরপুরে বস্তিবাসীদের মাঝে ৩০০ ফ্ল্যাটের ভাড়াপত্র হস্তান্তর করেন। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে মিরপুরে বস্তিবাসীদের জন্য ১৪৮ কোটি টাকা খরচে ১৪ তলা ৫টি ভবনের ৫৩৩টি আধুনিক ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার কথা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে।