উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতের ভিডিও ভাইরাল

উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতের ভিডিও ভাইরাল

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুলের প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

বুধবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ৪ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের এই ভিডিও ভাইরাল হলে এলাকায় সমালোচনার ঝড় ওঠে।

একজন জনপ্রতিনিধির হাতে এভাবে প্রকাশ্যে দিনদুপুরে অস্ত্র হাতে দেখে নানান প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান বলছেন এটি তার লাইসেন্স করা অস্ত্র। এটি তার নিরাপত্তার জন্যই তার সঙ্গে থাকে।

উপজেলার বটতলী মোটর স্টেশনের মা মণি হাসপাতাল এলাকার মাহমুদুল হকের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বুধবার উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুলের লোকজন বিরোধীয় জায়গায় গেট স্থাপনের কাজ করতে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর উপজেলা চেয়ারম্যান লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় চেয়ারম্যানের সঙ্গে কয়েকজনকে অস্ত্রশস্ত্র হাতে নিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে।

অস্ত্রধারীরা প্রতিপক্ষের বসতবাড়ি লক্ষ্য করে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। কয়েকজনকে ইট ছুড়তেও গেছে ভিডিওতে। একপর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুল নিজে অস্ত্র হাতে তুলে নেন।

মাহমুদুল হকের ছেলে সিরাজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন যাবত উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমাদের বসতভিটা লাগোয়া জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বুধবার বিকালে বিরোধীয় জায়গায় গেট লাগানোকে কেন্দ্র করে উপজেলা চেয়ারম্যান কয়েকজন সশস্ত্র যুবকসহ শতাধিক লোকজন নিয়ে উপস্থিত হয়। এ সময় যুবকরা আমাদের অবস্থান লক্ষ্য করে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করে ও ইট ছুড়ে মারে।

লোহাগাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুল বলেন, জায়গাটা আমি একটি গ্রুপের কাছে বিক্রি করেছি। জায়গাটাতে বাউন্ডারি দিতে গেলে মাহমুদুল হক গং কিরিচ নিয়ে আমাদের আক্রমণ করতে আসলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের ধাওয়া দেয়। জনসম্মুখে প্রদর্শন করা অস্ত্রটা লাইসেন্স করা। এটি তার নিরাপত্তার জন্য সঙ্গে থাকে বলে তিনি জানান।

লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ জাকির হোসাইন মাহমুদ বলেন, জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মাহমুদুল হকের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়েছে বলে শুনেছি। খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বলে তিনি জানান।

সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকারিয়া রহমান জিকু বলেন, লোহাগাড়া উপজেলা চেয়ারম্যানের বিক্রি করা জায়গার সামনে গেট নির্মাণ নির্মাণ করতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন বাধা দেয়। জায়গাটা বিরোধপূর্ণ ছিল। ফলে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে ঘটনাস্থলে লোহাগাড়া থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

তিনি বলেন, লাইসেন্স করা অস্ত্র জনসম্মুখে প্রদর্শন করে ভীতির সঞ্চার কিংবা জমি দখলের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। সার্বিক বিষয়টি পুলিশ নিবিড়ভাবে তদন্ত করছে বলে তিনি জানান।

এমজে/