ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের দাবি

সিলেটে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি বিক্ষোভের ডাক

সিলেটে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি বিক্ষোভের ডাক

সিলেটে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। ঘোষিত কমিটি বাতিল করা না হলে আজ থেকে লাগাতার বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান ও সাবেক কমিটির নেতারা। গতকাল সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই ঘোষণা দেন। এদিকে- কমিটি ঘোষণায় মতামত না নেয়ার কারণে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারাও ঘোষিত কমিটিকে মেনে নিতে পারছেন না। আওয়ামী লীগ নেতারাও ঘোষিত কমিটির ওপর ক্ষুব্ধ।

অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করে আওয়ামী লীগ নেতারা ঘোষিত দুই কমিটির প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে। দীর্ঘ চার বছর পর গত মঙ্গলবার সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। এরপর থেকে সিলেটে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত নগরীতে বিক্ষোভ, মহড়া হয়েছে। পাশাপাশি কমিটির পক্ষেও একাংশের নেতারা বিজয় উল্লাস ও মহড়া দিয়েছে। এর ফলে সিলেটে ছাত্রলীগের সেই পুরনো দ্বন্দ্ব নতুন করে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। ঘোষিত জেলা কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে টিলাগড়ের রঞ্জিত গ্রুপের নেতা নাজমুল ইসলামকে ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছে তেলিহাওর গ্রুপের নেতা রাহেল সিরাজকে। মহানগরের সভাপতি হয়েছেন দর্শন দেউরী গ্রুপের নেতা কিশোয়ার জাহান সৌরভ ও সাধারণ সম্পাদক কাশ্মির গ্রুপের নেতা মো. নাঈম আহমদকে।

এদিকে- গত মঙ্গলবারের উত্তেজনার পর গতকাল সকাল থেকেও নগরীর বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা দেখা দেয়। মহড়া পাল্টা মহড়া দেয়া হয়েছে। বিকালে সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাবেক ও বর্তমান নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ। সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন- ঘোষিত জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আজ থেকে লাগাতার অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ মিছিল পালন করা হবে। এই আন্দোলন চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সামাদ উল্লেখ করেন; ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক কোটি ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে অছাত্র, এমসি কলেজের ধর্ষণ মামলার আসামি ও ফ্রিডম পার্টির নেতার নাতিকে নিয়ে কমিটি ঘোষণা করেছে। এতে সিলেট ছাত্রলীগের নেতারা চরম লজ্জিত, হতাশ ও বিব্রত। কোনোভাবেই আমরা জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি নেবো না।’

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান- ‘আমাদের অভিভাবক সংগঠন সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কোনো প্রকার যোগাযোগ বা অবহিত না করে টাকার বিনিময়ে যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে সেটি সিলেট ছাত্রলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। কোনো গডফাদার ও মামলার আসামিকে আমরা ছাত্রলীগে মানি না।’ সংবাদ সম্মেলনে তিনি অনিয়মের মাধ্যমে ঘোষিত দুটি কমিটি বাতিল করে পরীক্ষিত, ত্যাগী ও গ্রহণযোগ্য নেতাকর্মীদের দিয়ে কমিটি গঠন করতে শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।’

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেতা-সালাহউদ্দিন পারভেজ, সাইফুর রহমান, সায়েদ আহমদ, খালেদুর রহমান, আশরাফুল ইসলাম বাপ্পি, নাইম রশিদ চৌধুরী, দীপঙ্কর টিপু, তোফায়েল ইসলাম সানি, সৌরভ জায়গীরদার, আশফাক আহমদ মাসুদ, মুহিবুর রহমান, ইমন ইবনে সমরাজ, সৌরভ সাওয়ান ও শ্রীমন রায়সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেতারা জানিয়েছেন- ‘তারা কারও বাসায় হামলা করেননি। বরং পরিবেশ অস্থিতিশীল করতে ক্ষমতাভোগী কিছু নেতা হামলার অভিযোগ করেছে। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।’