‘রামদা দিয়ে কোপানো হয় মাথা, পরে হকিস্টিক দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়’

‘রামদা দিয়ে কোপানো হয় মাথা, পরে হকিস্টিক দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়’

ছাত্রলীগের হামলায় গুরুতর আহত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মাহাদি আকিবকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে।

জীবন মরণ সন্ধিক্ষণে থাকা আকিবের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

আইসিইউতে থাকা আকিবের পুরো মাথা এখন সাদা ব্যান্ডেজ মোড়ানো। এক পাশে গোলাকার দাগ টানা হয়েছে, সেখানে লেখা ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’। মাথায় যাতে কেউ স্পর্শ না করে, তাই যথারীতি আঁকা হয়েছে বিপদ চিহ্নও। এই শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৬২তম ব্যাচের ছাত্র মো. মাহাদি আকিব। তিনি চমেকের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে আছেন। তাঁর মাথার খুলি থেঁতলে গেছে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে।

শনিবার সকাল ৯টায় চমেকের মেইন গেটের অদূরে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে অতর্কিত হামলা করে ছাত্রলীগের একটি পক্ষ।

যেভাবে আকিবের ওপর হামলা হয়

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগের নেতা মো. ইমন সিকদার বলেন, ওইদিন সকাল ৯টায় সিনিয়ররা তখন চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তারের সঙ্গে কথা বলছিলেন। নিচে ছিল মাহাদি আকিবসহ জুনিয়ররা। হঠাৎ ধাওয়া দিয়ে চমেকের মেইন গেটের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে মাহাদি আকিবকে পেয়ে ঘিরে ধরেন ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ। গলায় রিকশার চেইন দিয়ে বাধা হয়। কাচের বোতল দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। রামদা দিয়ে কোপানো হয় মাথায়। পরে হকিস্টিক দিয়ে মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। এ সময় তাকে উদ্ধার করে চমেকে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ বিষয়ে চমেকের অধ্যাপক ও ক্লিনিক্যাল নিউরো সার্জন এবং নিউরো সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এস এম নোমান খালেদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, 'মাহাদি আকিবকে যখন আমরা পাই, তখন তাঁর মাথা থেঁতলানো ছিল। হাড় ভেঙে গেছে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। ব্রেইন ডেমেজও হয়েছে। এই অবস্থায় অপারেশন করে মাথার কিছু অংশ তার শরীরের মধ্যে সংরক্ষণ করে রাখি।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা সফল অপারেশন করেছি। আমি আশাবাদী, মাহাদি আকিব ভালো হয়ে যাবেন।'

উল্লেখ্য, মাহাদি আকিব নটর ডেম কলেজ থেকে পাস করে চমেকে চান্স পান। গত শুক্রবার রাত ১২টায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পরে গতকাল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ওই দিন সন্ধ্যার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি।