অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

ফেনীর আলোচিত অন্তঃস্বত্ত্বা গৃহবধু শিরিনা আক্তারকে হত্যা মামলায় স্বামী মোঃ ইয়াছিনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রোববার ফেনী জেলা ও দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছা এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ শিবপুর গ্রামের জাফর সর্দার বাড়ির মোস্তফার মেয়ে শিরিন আক্তারের সাথে বিয়ে হয় একই এলাকার আহসান উল্লাহর ছেলে মোঃ ইয়াছিনের সাথে। বিয়ের পর পারিবারিক কলহের জের ধরে সংসারে সবসময় বিবাধ লেগেই থাকতো। একপর্যায়ে ২০১৯ সালের ৫ মার্চ রাতে দুই মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা অবস্থায় গৃহবধু শিরিনকে বৈদ্যুতিক শকের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। ৭ মার্চ এ ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় গৃহবধুর মা রেজিয়া বেগম হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু তাহের প্রধান আসামি ইয়াছিনকে গ্রেফতার করার পর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি করা হয়। গত বছরের ১০ নভেম্বর একমাত্র আসামি ইয়াছিনকে অভিযুক্ত করে চার্জগঠন করা হয়। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু তাহের ২০২০ সালের ১৮ জানুয়ারি ইয়াছিনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

সূত্র আরো জানায়, ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের শুরু হয়ে চলতি বছরের ১৬ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এই মামলায় আটজনের সাক্ষ্য নেয়া হয়। ২০১৯ সালের ৮ মার্চ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ধ্রুব জ্যোতি পালের আদালতে আসামি ইয়াছিন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। জবানবন্দিতে স্ত্রীকে হত্যার জন্য নিয়েই দায়ী বলে স্বীকার করেছিলেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোঃ আলতাফ হোসেন জানান, রায় ঘোষণাকালে আসামি মোঃ ইয়াছিন কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় রায়ে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস ছাত্তার জনান, রায়ে আসামির উপর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা রায়ের কপি নিয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

পাবলিক প্রসিকিউটর হাফেজ আহাম্মদ জানান, আসামি ইয়াছিন নিজেই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে নিজেই স্ত্রীকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেন। এছাড়া আসামির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে সর্বোচ্চ দন্ডে দন্ডিত করেছেন।

এমজে/