বউ পেটানোর অভিযোগ এমপি মুরাদের বিরুদ্ধে, থানায় জিডি

বউ পেটানোর অভিযোগ এমপি মুরাদের বিরুদ্ধে, থানায় জিডি

সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ এনেছেন তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান। বৃহস্পতিবার জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছেন ডা. জাহানারা। ফোন পেয়ে ধানমন্ডি থানা পুলিশের একটি টিম ডা. মুরাদের ধানমন্ডির বাসায় যায়। তবে সেখানে ডা. মুরাদকে পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার ডা. জাহানারা প্রথমে ৯৯৯-এ ফোন করে নির্যাতনের অভিযোগ করেন। পরে রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় ডা. মুরাদের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

জিডিতে ডা. জাহানারা এহসান অভিযোগ করেন, বিবাদী ডা. মুরাদ হাসান আমার স্বামী। তিনি বর্তমান সরকারের সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী। সাম্প্রতিক সময়ে কারণে-অকারণে আমাকে ও সন্তানদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে এবং হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দিকে আমাকে ও আমার সন্তানদের গালিগালাজ করে এবং মারধর করার উদ্যোগ গ্রহণ করলে আমি ৯৯৯ এ ফোন করি। এরপর ধানমণ্ডি থানা পুলিশ কল পেয়ে বাসায় পৌঁছালে তার আগেই সে বের হয়ে যায়। এমতাবস্থায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিবাদী আমার ও আমার সন্তানদের যে কোন ক্ষতি করতে পারে।

এ বিষয়ে ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ডা. মুরাদ হাসানের স্ত্রী সন্ধ্যায় ধানমণ্ডি থানায় একটি জিডি করেছেন। জিডিতে তিনি স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন। আমরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। দায়িত্বরত পুলিশ তাকে বাসায় গিয়ে পায়নি। তিনি কোথায় আছেন আমরা তা জানি না। তবে আমরা বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছি। ’

এর আগে আজ বৃহস্পতিবার ডা. মুরাদ হাসানের স্ত্রী জাহানারা এহসান ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি ধানমণ্ডি থানা পুলিশকে জানান। এরপরই পুলিশের একটি টিম মুরাদের বাসায় যায়।

সম্প্রতি এক চিত্রনায়িকার সঙ্গে ডা. মুরাদের অশালীন ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের এই সংসদ সদস্যকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত ৭ ডিসেম্বর তিনি পদত্যাগ করলে ওইদিন রাতেই তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। একইদিনে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় মুরাদ হাসানকে জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এর ধারাবাহিকতায় তাকে সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার মুরাদ হাসানকে তার নিজ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।এ ছাড়া মুরাদের আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিলের বিষয়েও দলের পরবর্তী কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

গত ৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে কানাডার উদ্দেশে দেশত্যাগ করেছিলেন তিনি। এরপর কানাডার টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলেও তাকে সে দেশে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

সেখান থেকে তাকে দুবাইগামী একটি ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু দুবাইও তাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। সেখানেও ব্যর্থ হওয়ার পর আর উপায় না পেয়ে দেশে ফিরে আসেন বিতর্কিত এ রাজনীতিক।