আইজিপির জার্মান সফর নিয়ে নানান কথা

বালিশ কভার, চাদর কেনা হবে না: পুলিশ, প্রতিনিধিদল সফরের কথা ছিল: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বালিশ কভার, চাদর কেনা হবে না: পুলিশ, প্রতিনিধিদল সফরের কথা ছিল: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের জার্মান সফর নিয়ে নানান কথা বলছে পুলিশ। বালিশের জন্য সফর নিয়ে তৈরি বিতর্কের মাঝে কয়দিন আগে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, নয়দিনের জার্মানি সফরে যাচ্ছেন মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদসহ তিন কর্মকর্তা।বিছানার চাদর কিনতে নয়, পুলিশ বাহিনীর জন্য এক লাখ বিছানার চাদর ও বালিশের কাভার কেনার প্রক্রিয়ায় রঙের মান যাচাইয়ে এ সফরে যাচ্ছেন আইজিপিসহ ওই তিন কর্মকর্তা।

এদিকে, বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে তারাই আবার বলছে, জার্মানি থেকে এক লাখ চাদর কেনার কোনো পরিকল্পনা পুলিশ বাহিনীর নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

বাহিনীটি বলেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অপপ্রচারকারী চক্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গুজব ছড়িয়েছে। তারা পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা করেছে।

অন্যদিকে, কয়দিন আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম মজুমদারের সই করা এক আদেশে বলা হয়, এক লাখ বিছানার চাদর ও বালিশের কভারের (ডাবল) শিপমেন্টের জন্য (জাহাজীকরণ) ‘ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপটেন্স টেস্টে’ অংশ নিতে তিন কর্মকর্তা এই সফরে যাবেন।

অফিস আদেশের শর্তাবলির মধ্যে রয়েছে, ওই পরিদর্শনমূলক সফরের সব খরচ আয়োজক বহন করবে এবং এর সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের কোনো আর্থিক যোগ থাকবে না।

পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক মো. কামরুজ্জামানের আজকের পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি স্যোশাল মিডিয়াতে আইজিপি মহোদয় পুলিশ বাহিনীর জন্য জার্মানি থেকে ১ লাখ চাদর ক্রয় করার লক্ষ্যে জার্মানি সফর করছেন মর্মে একটি অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারিত হয়েছে।’ তিনি বলেন, আদতে পুলিশ জার্মানি থেকে বালিশের কভারসহ বিছানার চাদর কিনছে না। জার্মানি বিছানার চাদর উৎপাদন ও রপ্তানিকারক কোনো দেশ না, তারা ভারী শিল্পের দেশ।

সদর দপ্তর বলেছে, পুলিশ মহাপরিদর্শকের চাদর ও বালিশের কভার কিনতে জার্মানি যাওয়ার কোনো অবকাশ নেই। তা ছাড়া সরকারি ক্রয় নীতিমালা আইন অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তারা ব্যক্তিগত জিনিসপত্র কেনাকাটার মতো করে সরকারি পণ্য কেনা বা সংগ্রহ করতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে নির্ধারিত সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া আছে।

পুলিশ বলছে, তারা সব সময়ই স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে স্থানীয় প্রস্তুতকারীদের তৈরি বিছানার চাদর ও বালিশের কভার কিনে থাকে। এ বছরও একইভাবে কেনা হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সরকারি আদেশের অনিচ্ছাকৃত ভাষাগত বিভ্রাটের কারণে এই ‘তথ্যগত বিভ্রান্তি’ দেখা দিয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, এ বিজ্ঞপ্তির পর এ ধরনের সব বিভ্রান্তির নিরসন হবে বলে তারা প্রত্যাশা করে।

এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রধান হিসাব নিরীক্ষককে পাঠানো চিঠিটি গতানুগতিক চিঠি ছিল। কোনো ভুল ছিল না। পুলিশ সদর দপ্তর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরই অঙ্গ। তাদের বাক্‌স্বাধীনতা আছে, তাই বলছে সরকারি আদেশে ভুল ছিল। আদতে সরকারি ক্রয় নীতিমালা অনুযায়ী একটি প্রতিনিধিদলের চাদরে ব্যবহৃত রং–এর মান যাচাইয়ে যাওয়ার কথা ছিল।