প্রভাবশালীদের চাপেই কি শরীফের চাকুরিচ্যুতি, প্রশ্ন টিআইবির

প্রভাবশালীদের চাপেই কি শরীফের চাকুরিচ্যুতি, প্রশ্ন টিআইবির

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলোচিত কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, টিআইবি।

বিরাগভাজন প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের চাপের কারণেই কি শরিফ উদ্দিনকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালী বদলি করা এবং সবশেষ চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের বিষয়ে টিআইবি ধোঁয়াশা স্পষ্ট করতে দুদককে আহ্বান জানিয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মন্জুর-ই-আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শরীফ উদ্দিন চট্টগ্রামে কর্মরত অবস্থায় দক্ষতা ও সাহসের সাথে কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণে বিশাল অঙ্কের দুর্নীতি, রোহিঙ্গা নাগরিকদের এনআইডি ও পাসপোর্ট জালিয়াতি, কর্ণফুলী গ্যাসে অনিয়মসহ বেশ কিছু আলোচিত দুর্নীতিবিরোধী অভিযান ও মামলা পরিচালনায় মূল ভূমিকায় জড়িত ছিলেন। এসময় যেসব সিন্ডিকেট তার বিরাগভাজন হয়, তাদের চাপেই শরীফ উদ্দিনকে চাকুরিচ্যুত করার গুঞ্জন ও অভিযোগের বিষয়ে দুদকের স্পষ্ট অবস্থান জনতে চেয়েছে তারা।

টিআইবি বলছে, দুদকের চাকুরিবিধি অনুযায়ী কোনো কর্মীকে অপসারণের এখতিয়ার দুদকের হাতে থাকতেই পারে, কিন্তু দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের মতো জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন দক্ষ ও সাহসী কর্মকর্তার সুরক্ষা নিশ্চিতের পরিবর্তে কেন অপসারণের পথ বেছে নিতে হলো তা দুদকের নিকট থেকে জানার অধিকার জনগণের রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে দুদকের অবস্থান পরিস্কার করার আহ্বান জানিয়ে টিআইবি বলছে, জনমনে তৈরি হওয়া প্রশ্নের সদুত্তর দিতে না পারলে দুদকের বিশ্বাসযোগ্যতা গভীরতর সংকটের মুখে পড়বে।

প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া এবং ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তিসহ অনিয়মের বিভিন্ন ঘটনার তদন্ত করে আলোচনায় আসা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। জীবননাশের হুমকি পাওয়ার ১৬ দিনের মাথায় চাকরি খোয়ালেন শরীফ।

গত ৩০ জানুয়ারি প্রাণনাশের হুমকি পাওয়ার কথা জানিয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে চট্টগ্রামের খুলশী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন শরীফ উদ্দিন। ১৬ ফেব্রুয়ারি তাকে চাকরিচ্যুতির আদেশ দেয় দুদক। বুধবার দুদক কার্যালয় থেকে তাকে চাকরি থেকে অপসারণের প্রজ্ঞাপনও জারি হয়।

এতে বলা হয়, প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকে তার অপসারণের আদেশ কার্যকর হবে এবং বিধি অনুযায়ী তিনি ৯০ দিনের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

শরীফ গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, তাকে কোনো ধরনের ‘কারণ দর্শাও নোটিশ না দিয়ে’ অপসারণ করা হয়েছে, যেটি ‘অসাংবিধানিক’। তিনি ‘প্রভাবশালী মহলের’ রোষানলের শিকার বলে দাবি শরীফ উদ্দিনের।

শরীফকে চাকরিচ্যুতির বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান মো. মঈনুদ্দিন আবদুল্লাহ বলছেন, শরীফ উদ্দিন এমন কিছু করেছিলেন, যাতে ওই সিদ্ধান্ত নিতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েছে।