সুনামগঞ্জে সংবাদ সম্মেলন

হাওরে বাঁধ নির্মাণে সম্মিলিত লুটপাট

হাওরে বাঁধ নির্মাণে সম্মিলিত লুটপাট

হাওর নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের প্রতিনিধিরা দুদিন সুনামগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন হাওর ও বাঁধ ঘুরে সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এতে হাওরের বর্তমান পরিস্থিতির ওপর পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে তারা বলেছেন, সরকার কৃষকদের প্রতি আন্তরিক, এ কারণেই প্রতি বছর হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে শত কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু যারা কাজ বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত তাদের মধ্যে সমস্যা। তারা এটিকে ব্যবসায় পরিণত করেছেন। সমানে লুটপাট চালাচ্ছেন। এর সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন, প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা যুক্ত।

হাওর অ্যাডভোকেসি প্লাটফর্ম (হ্যাপ) নামের ওই সংগঠন ‘হাওরে বাঁধ বিপর্যয়’ শিরোনোমে শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পাবলিক লাইব্রেরির হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন করে।

এতে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক শরিফুজ্জামান। হাওরের নানা সংকট নিয়ে কথা বলেন সুনামগঞ্জে হাওরের কৃষি ও কৃষক রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার, হ্যাপের সদস্য ইয়াহিয়া সাজ্জাদ এবং সুনামগঞ্জ হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতা নির্মল ভট্টাচার্য। সংগঠনের পক্ষ থেকে দুই দিন জেলার তিনটি উপজেলার পাঁচটি হাওর ঘুরে দেখেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এক সময় হাওরে ঠিকাদারদের মাধ্যমে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ হতো। তবে এখন স্থানীয় কৃষক ও সুবিধাভোগীদের নিয়ে গঠিত প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে কাজ হচ্ছে। এই পদ্ধতিটি এখন পর্যন্ত ভালো। প্রথম দু-এক বছর ভালোই চলছিল।

এখন এটিকে নিষ্ক্রিয় করা, বিতর্কিত করার একটা ষড়যন্ত্র আছে। এ কারণে কমিটিতে নামে-বেনামে স্থানীয় রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক প্রভাবশালীরা ঢুকে পড়েন। তারা এসব পিআইসি নিজেদের কবজায় নিয়ে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন। সরকারি টাকা লুটপাট হচ্ছে। এতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশ আছে। এ কারণেই বাঁধের কাজ হয় দায়সারা, সময়মতো কাজ শুরু ও শেষ করা যায় না।

সংবাদ সম্মেলনে এ থেকে উত্তরণে উপায় হিসেবে বলা হয়, হাওর এলাকার নদ-নদী খনন জরুরি। অনিময় ও দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে পিআইসির সংস্কার করতে হবে। কাজ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। প্রশাসন ও পাউবো কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে কাজ অবশ্যই যথা সময়ে শুরু এবং শেষ করতে হবে। এবার যারা বাঁধের অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত তদন্ত্ম করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।