আটক ৪৫৩ রোহিঙ্গাকে ক্যাম্পে ফেরত  

আটক ৪৫৩ রোহিঙ্গাকে ক্যাম্পে ফেরত   

 

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের আশ্রয়শিবির থেকে কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থী যেন বাইরে যেতে না পারেন, সে জন্য কড়াকড়ি ব্যবস্থা নিয়েছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। ওই ২ উপজেলার ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে ২০টির বেশি তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে।

এদিকে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আটক ৪৫৩ রোহিঙ্গাকে রাতে উখিয়ার বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এসব রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে কক্সবাজার সৈকতসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে–ছিটিয়ে ঘোরাফেরা করছিলেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে কয়েকজন রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে সমুদ্রসৈকত ভ্রমণে আসা পর্যটকদের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগ ছিল।

ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সকাল থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে অভিযান চালিয়ে শতাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আটক করা হয়েছে। ঈদের ছুটি উপলক্ষে তাঁরা উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে সমুদ্রসৈকতে ছুটে আসেন। অনেকে সমুদ্রে নেমে পর্যটকদের সঙ্গে গোসল করছিলেন। এ সময় রোহিঙ্গারা সৈকতের কয়েকজন পর্যটককে বিরক্ত করেন। তবে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সৈকতে রোহিঙ্গাদের দেখা যায়নি।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন কার্যালয়ের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছু-দৌজ্জা বলেন, সৈকতসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক ৪৫৩ রোহিঙ্গাকে বুধবার রাতে একাধিক যানবাহনে করে উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ভবিষ্যতে ক্যাম্প থেকে কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থী যেন বাইরে যেতে না পারেন, সেটা নিশ্চিত করতে আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর রাখা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, কক্সবাজার পৌরসভার অভ্যন্তরে বিভিন্ন পাহাড়ে বেশকিছু রোহিঙ্গা অবস্থান নিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তাঁদের আটক করার চেষ্টা চলছে।

আটক রোহিঙ্গাদের কয়েকজন বলেন, ১০-১৫ জন দল বেঁধে ক্যাম্পের চোরাইপথ দিয়ে বেরিয়ে প্রথমে উখিয়া বাজারে আসেন। তারপর সেখান থেকে ইজিবাইক, টমটম ও অন্যান্য বাহনে উঠে সরাসরি কক্সবাজার শহরে পৌঁছান। এর মধ্যে কিছু রোহিঙ্গা সমুদ্রসৈকতে নামলেও অনেকে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন পাহাড় ও চট্টগ্রামের পথে চলে গেছেন। কক্সবাজারের বিভিন্ন পাহাড়ে কয়েক বছর ধরে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি তৈরি করে বাস করছেন বলে তাঁরা দাবি করেন।

জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, আশ্রয়শিবির থেকে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের বাইরে আসার নিয়ম নেই। তারপরও রোহিঙ্গারা নানা পথে বেরিয়ে আসছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরাও পড়ছেন। রোহিঙ্গারা যেন ক্যাম্পের বাইরে আসতে না পারেন, সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।