‘ছাত্রলীগের গুন্ডাদের হাতে লাঠি, আসামি অজ্ঞাতনামা কেন’

‘ছাত্রলীগের গুন্ডাদের হাতে লাঠি, আসামি অজ্ঞাতনামা কেন’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ওপর সম্প্রতি ছাত্রলীগের হামলাকে কেন্দ্র করে কর্তৃপক্ষের করা অজ্ঞাতনামা ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক উপাচার্য আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, অজ্ঞাতনামা কেন? আপনারা তো দেখেছেন কার হাতে লাঠি। ছাত্রলীগের গুন্ডাদের হাতে লাঠি, হকিস্টিক, রাম দা ছিল। তাহলে অজ্ঞাতনামা হলো কেন? গ্রেপ্তার করেছেন ছাত্রদলের ছেলেদের।

শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী। আলোচনা সভার আয়োজন করে ভয়েস ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ভোটার রাইটস।

আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজকে সন্ত্রাসীদের একটা জায়গা হয়েছে। সন্ত্রাসী লালন–পালন করা হয়। সেখানে শিক্ষক নিয়োগের নামে ভোটার নিয়োগ করা হয়।

নিয়োগের বিষয়ে আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, এখন কারও নিয়োগ হলে তার বাবা, দাদা বিএনপি করত কি না, তা দেখা হয়। এভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে নগ্নভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্ধশিক্ষিত গ্র্যাজুয়েট তৈরি করছে। একজন প্রবীণ শিক্ষক হিসেবে এটা হতাশার। সাবেক এই উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে বন্দুক ও বই একসঙ্গে থাকতে পারে না।

সম্প্রতি খালেদা জিয়া ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গে করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে কোনো কথাই আওয়ামী লীগের কানে প্রবেশ করে না বলেও মন্তব্য করেন আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আপনারা অনাদিকাল ক্ষমতায় থাকবেন, এটা ভাববেন না। আপনাদের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। দ্রব্যমূল্যের বাজার এখন অস্থিতিশীল। এটা নিয়ে কোনো কথা নেই তাদের (আওয়ামী লীগের)। দেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার চেয়েও খারাপ হবে। গণ-আন্দোলন অচিরেই গণ-অভ্যুত্থানে পরিণত হবে।’

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে বসেন। তখন শেখ হাসিনা বলেছিলেন তাঁদের ওপর বিশ্বাস রাখতে। এমন নির্বাচনের পর এখন আবার মানুষ বিশ্বাস করবে কীভাবে?

২০২৩ সালের নির্বাচনকে জনগণের শেষ সুযোগ বলে উল্লেখ করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল লতিফ মাসুম। তিনি বলেন, ‘কৌশল বের করতেই হবে। এবার আন্দোলনে যদি ব্যর্থ হই, তাহলে এই জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা প্রকাশের সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার। সঞ্চালনা করেন হুমায়ুন কবির ব্যাপারী। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন ও খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদির গণি চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক শাহ আলম প্রমুখ।