শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যাবে না: ফখরুল

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যাবে না: ফখরুল

ক্ষমতাসীনরা যত সমালোচনাই করুক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস থেকে কখনো মুছে ফেলতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দলটির মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আমরা ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলাগুলোতে সম্মেলন করতে যাচ্ছি। সেখানে দেখছি মানুষের কী আকুতি, কী আবেগ। কালকে যখন আমি যশোর থেকে ঝিনাইদাহ যাওয়ার সময় দেখলাম পথে পথে মানুষ চতুর্দিকে দাঁড়িয়ে আছে। মানুষ সেই পুরনো অবস্থায় ফিরে যেতে চায় যেন তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। আজকে জিয়াউর রহমান সাহেবকে যে যত ইচ্ছা বলুক তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। কারণ এই দেশের মানুষের হৃদয়ের মধ্যে তিনি গেঁথে গেছেন। জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস ধারণ করেছে, তাকে কখনো মুছে ফেলা যাবে না।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হচ্ছেন আমাদের সেই আলোকবর্তিকা। যার দিতে তাকিয়ে আমরা কথা বলব। তার তো ব্যর্থতা নেই।

তিনি শহীদ হয়ে গেছেন। কিন্তু তার আদর্শ তো ফুরিয়ে যায়নি। আমাদের আরেকজন নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কথাটা আমার প্রায় মনে হয়, তিনি সেই পতাকাটা হাতে তুলে নিয়েছিলেন যেই পতাকা শহীদ জিয়ার পতাকা ছিলো। ওই পতাকা নিয়ে দেশনেত্রী ৯ বছর সংগ্রাম করেছেন। রাস্তায়, পথে-প্রান্তরে, আমাদের এই নেতাদেরকে সঙ্গে নিয়ে, ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন এবং সফল হয়েছেন। ১৯৯০ সালে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছিলেন।

‘তারেক সফল হবেন’

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আবার যখন আমাদের সবচেয়ে বড় সংকট তখন আবার আমাদের সামনে এসে আবির্ভুত হয়েছেন তারই যোগ্য উত্তরসূরী তারেক রহমান। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গতকাল না পরশু প্রশ্ন তুলেছেন, তারেক রহমান সেই টেইমস নদীর পার থেকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠা করবেন-এটা কী সম্ভব হবে? ওবায়দুল কাদের সাহেব অবশ্যই সম্ভব হবে, অবশ্যই সম্ভব হবে। কারণ তারেক রহমান সাহেব সেই রাজনীতি ধারণ করেছেন, যেই রাজনীতি সারাদেশের মানুষের রাজনীতি। এখন মানুষ মুক্তি চায়, এখন মানুষ তার হারানো অধিকার ফিরে পেতে চায়, এখন মানুষ একটা স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে চায়, এই হত্যা-ধর্ষন-খুন-জখমের মধ্য থেকে বেরিয়ে আনতে চায়।

দলের প্রতিষ্ঠাতার এই দিনটি বিএনপি শাহাদাত বার্ষিকী হিসেবে পালন করে। ৪১ তম এই শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি ১০ দিনের যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এই আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে তা শুরু হলো। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সেনাবাহিনীর একদল বিপদগামী সদস্যের অভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হন।

‘আওায়ামী লীগ একদিন থাকলেও ক্ষতি’

মির্জা ফখরুল বলেন, পত্রিকায় দেখলাম পাঁচার করা অর্থ তারা না কি ফিরিয়ে আনবে আবার। আরেক শয়তানি শুরু করবে আবার। অর্থাৎ নিজেরা এই টাকা পাঁচার করেছে এটাকে ফিরিয়ে এনে জায়েজ করবে। তারা দেশের সম্পদ লুট করা সম্পদ ফিরিয়ে নিয়ে এসে আবারোও লুটপাটের সুযোগ করে দেবে। এদেরকে কোনো মতেই বিশ্বাস করা যায় না। ওরা বরাবরই প্রতারক। আওয়ামী লীগকে আমরা দেখেছি। তারা বরাবরই প্রতারনা করেছে। সেই আওয়ামী লীগকে কোনো মতেই আর ক্ষমতায় থাকতে দেয়া যায় না। একদিন থাকলেও আমাদের ক্ষতি।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, অধ্যাপক সাহিদা রফিক, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, যুব দলের সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, মহানগর দক্ষিনের রফিকুল আলম মজনু, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন।