হামলা হলো বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর, মামলা করল ছাত্রলীগ

হামলা হলো বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর, মামলা করল ছাত্রলীগ

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে হামলার ঘটনায় দলটি কোনো মামলা করেনি। তবে একই ঘটনায় বিএনপির ২৪১ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে ছাত্রলীগ। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক এস কে সৌরভ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রলীগের মিছিলে হামলার অভিযোগে গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে মামলা হয়েছে। এতে ৪১ জনের নাম উল্লেখ ও ১০০-২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

গতকাল সকালে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিতে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা শ্রীনগর-দোহার বাইপাস এলাকায় জড়ো হন। সকাল ১০টার দিকে তাঁরা মিছিল বের করেন। এ সময় ছাত্রলীগও একটি মিছিল নিয়ে ওই এলাকায় আসে। পরে ছাত্রলীগ-যুবলীগ এক হয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়।

এতে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিবসহ অন্তত ৫০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করছে দলটি। বিএনপির অভিযোগ, পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগ এ হামলা করেছে। তবে ছাত্রলীগ বলছে, বিএনপির থেকে তাদের শোক মিছিলে হামলা করে ১০ থেকে ১৫ জনকে আহত করা হয়েছে। এ নিয়ে পরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা এস কে সৌরভ আজ বিকেলে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শোকমিছিল নিয়ে বাইপাস সড়কে যাচ্ছিলাম। বিএনপির লোকজনও সেখানে মিছিল নিয়ে আসে। আমাদের দেখেই তাঁরা উসকানিমূলক কথা বলে এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এতে আমাদের ১০-১২ জন নেতা-কর্মী আহত হন। পরবর্তী সময়ে আমরা পুলিশকে খবর দিই। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আমাদের ওপর হামলার ঘটনায় আমি বাদী হয়ে মামলাটি করেছি।’

উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব হাফিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা রামদা, হকিস্টিক, লোহার রড নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করল। হামলায় ৫০ নেতা-কর্মী আহত হলো। আমাদের ওপর নির্যাতন করল, সবার কাছে সেই ভিডিও আছে। অথচ আমাদের নামেই উল্টো মামলা হলো। এটি কোনো সভ্য দেশ? সভ্য দেশে তো এমনটা হতে পারে না।’

হামলার শিকার হয়েও মামলা করেননি কেন, জানতে চাইলে হাফিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘শ্রীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও ছাত্রলীগ আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত থেকে আমাদের পেটানোর নির্দেশ দেয়। যেখানে পুলিশ একটা দলের পক্ষ হয়ে কাজ করছে, সেখানে থানায় আমরা কতটুকু নিরাপদ?’

শ্রীনগর থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি নেতারা মিথ্যা বলছেন। ঘটনার দিন আমরা তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতাল পৌঁছে দিয়েছি। তাঁরা থানায় এসে অভিযোগ করলেই আমরা মামলা নেব।’