পদ্মায় জেগে উঠেছে ডুবোচর, ফেরি চলাচল ব্যাহত

পদ্মায় জেগে উঠেছে ডুবোচর, ফেরি চলাচল ব্যাহত

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে জেগে ওঠা ডুবোচর খননের এক মাসে ফের ডুবোচর জেগে উঠেছে। এছাড়া উজানের বালুমাটি এসেপদ্মা নদীর চ্যানেলে পড়ে ভরাট হওয়ায় ওয়ানওয়ে পদ্ধতিতে ফেরি চলাচল করছে।

এর আগে ডুবোচরের কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ার তিন কিলোমিটার নদী পাড়ি দিতে অতিরিক্ত দুই-তিন কিলোমিটার ঘুরতে হতো। যে কারণে ২৫-৩০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগতো প্রায় এক ঘণ্টার মতো। প্রায় এক মাস আগে দুই হাজার ফুট লম্বা ও ৩০০ ফুট চওড়া করে ডুবোচর কেটে চ্যানেল তৈরি করে গত ২৩ জানুয়ারি খুলে দেয়া হয়। খননকৃত চ্যানেলে বালুমাটি পড়ে ভরাট হওয়ায় ও ডুবোচর জেগে উঠায় পাশাপাশি দুটি ফেরি আসা-যাওয়া করতে পারছে না। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে ওয়ানওয়ে পদ্ধতিতে ফেরিগুলো চলাচল করছে। ফেরি মাস্টাররা দ্রুত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে চ্যানেলের নাব্যতা ঠিক রাখার দাবি জানিয়েছেন।

রো রো ফেরি শাহ জালাল -এর প্রধান মাস্টার ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, ফেরি চলাচলের সময় পাখার ঘূর্ণিপাকে বালুমাটি দুই পাশ থেকে ধসে চ্যানেলে পড়ছে। উজান থেকেও প্রতিনিয়ত রাতের তোড়ে বালুমাটি চ্যানেলে পড়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। দুই পাশে পানি কম থাকায় মার্কিং চিহৃ থাকলেও পাশাপাশি দুটি ফেরি আসা যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় ওয়ানওয়ে পদ্ধতিতে চলাচল করতে হচ্ছে। পুনরায় দ্রুত খনন করা প্রয়োজন। নতুবা যেকোনো মুহূর্তে চ্যানেল বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দৌলতদিয়া চার নম্বর ফেরি ঘাট থেকে পাটুরিয়া ঘাট বরাবর প্রায় দেড় কিলোমিটার পরেই বিশাল ডুবোচর। বিশাল জায়গা জুড়ে জেগে ওঠা ডুবোচরের পাশ দিয়ে প্রায় এক মাস আগে তৈরি করা চ্যানেল দিয়ে ওয়ানওয়ে পদ্ধতিতে ফেরি চলছে। এতে আগের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগছে।

শুষ্ক মৌসুমে নদী পাড়ি দিতে সময় লাগতো ২৫ থেকে ৩০ মিনিট। ডুবোচর এড়িয়ে দীর্ঘ পথ ঘুরে আসতে সময় লাগতো প্রায় এক ঘণ্টা। চ্যানেল দিয়ে পাশাপাশি আসা যাওয়া করতে না পারায় পাটুরিয়া থেকে ছাড়া ফেরি প্রায় দুই কিলোমিটার ভাটি ঘুরে দৌলতদিয়া আসতে সময় লাগছে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ১৫ মিনিট বেশি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (মেরিন) আব্দুস সাত্তার বলেন, ডুবোচরের কারণে দুই-তিন কিলোমিটার পথ ঘুরে ফেরি চলাচল করায় ড্রেজিং শেষে ২৩ ডিসেম্বর নতুন চ্যানেল খুলে দেয়া হয়। কিন্তু নতুন করে উজানে রাতের তোড়ে এবং ফেরির পাখার ঘূর্ণয়নে বালুমাটি চ্যানেলে পড়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আমরা চ্যানেলটি ঠিক রাখতে বিআইডব্লিউটিএকে জানিয়েছি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মো: মাসুদ রানা বলেন, এক মাসের বেশি ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে প্রায় দুই হাজার ফুট লম্বা ও ৩০০ ফুট চওড়া মধ্যবর্তী ডুবোচর চ্যানেল তৈরি করা হয়। চ্যানেলের মাঝে পানির গভীরতা ছিল প্রায় ১৬ ফুট। চ্যানেলে বালুমাটি পড়ে ভরাট হলে নতুন করে ড্রেজিং করা হবে। এ জন্য তারা প্রস্তুত আছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।