আইএমএফের শর্ত পূরণের পর্যালোচনা হবে দুই মাস অন্তর

আইএমএফের শর্ত পূরণের পর্যালোচনা হবে দুই মাস অন্তর

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ নিচ্ছে বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে প্রথম কিস্তির অর্থ ছাড় হয়েছে। আর্থিক ও রাজস্ব খাতে সময়োপযোগী ঘন ঘন তথ্য–উপাত্ত সৃষ্টি করাসহ বিভিন্ন খাতে সময় ধরে সংস্কারের শর্ত দিয়েছে সংস্থাটি।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে সংস্কারের কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ২০২৬ সাল পর্যন্ত এই কমিটি কাজ করবে। প্রতি দুই মাস পরপর বৈঠক করে শর্ত কতটা পূরণ হলো তা পর্যালোচনা করবে এই কমিটি। এ ছাড়া শর্ত পূরণে কোনো প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলে তা সঙ্গে সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে।

আইএমএফের ঋণ অনুমোদন পাওয়ার আগেই অবশ্য এই কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তবে এক মাস ধরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে কমিটিতে প্রতিনিধি দেওয়া হচ্ছে।

এই কমিটির সদস্য সংখ্যা ২২। কমিটির প্রধান অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রেহানা পারভীন। এ ছাড়া অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি), বিদ্যুৎ বিভাগ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা এখানে কাজ করবেন।

এই কমিটিতে স্থান পাওয়া আইএমইডির পরিচালক এস এম নাজিমউদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বিভাগে আইএমএফের শর্ত পূরণে কর্মপরিকল্পনা কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে, তা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে তা নিরসনের উদ্যোগও নেওয়া হবে।’

অর্থনৈতিক চাপে আর্থিক লেনদেনের ভারসাম্য ধরে রাখতে আইএমএফের কাছ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ছয় কিস্তিতে এই অর্থ পাওয়া যাবে। প্রতিটি কিস্তিতে অর্থের পরিমাণ ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। গত ৩০ জানুয়ারি প্রথম কিস্তির অর্থ পেয়েছে বাংলাদেশ। আইএমএফ বলেছে, প্রতিটি কিস্তির ছাড়ের আগে যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছ, তার কতটা পূরণ হলো তা দেখা হবে।

আইএমএফ এবার রাজস্ব খাত ও আর্থিক খাতে বেশি শর্ত দিয়েছে, যেমন ২০২৫-২৬ অর্থবছর পর্যন্ত প্রতিবছর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দশমিক ৫ শতাংশ থেকে দশমিক ৭ শতাংশ শুল্ক–কর বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে যৌক্তিকভাবে কমাতে হবে শুল্ক–কর অব্যাহতি।

এ ছাড়া আরও কিছু সংস্কারের শর্ত রয়েছে, যেমন নিরীক্ষা কার্যক্রমে এনবিআরে শুল্ক, কর ও ভ্যাট—এই তিন বিভাগের মধ্যে তথ্যের আদান–প্রদান ব্যবস্থা শক্তিশালী করা, কর প্রশাসন স্বয়ংক্রিয় করা, উৎসে কর আদায় বৃদ্ধি, আধুনিক শুল্ক আইন প্রণয়ন ইত্যাদি।

এ ছাড়া আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন ব্যাংক কোম্পানি আইন জাতীয় সংসদে উত্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি প্রান্তিকভিত্তিক জিডিপির হিসাব করার শর্তও দিয়েছে আইএমএফ।