কক্সবাজারে উদ্ধার হওয়া ১০ মরদেহের পরিচয় শনাক্ত

কক্সবাজারে উদ্ধার হওয়া ১০ মরদেহের পরিচয় শনাক্ত

কক্সবাজারে উদ্ধার হওয়া ১০ মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। মরদেহগুলোর বেশিরভাগ গলে গেলেও পরনের কাপড় ও অবয়ব দেখে তাদের শনাক্ত করার দাবি করেন স্বজনেরা। তারা বলছেন, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন কিশোর। তবে পুলিশ বলছে, ডিএনএ রিপোর্ট পাবার আগে শনাক্ত বা মরদেহ হস্তান্তর সম্ভব নয়।

 

পরিচয় শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার রফিক মিয়ার ছেলে সামশুল আলম (২৩), শাপলাপুর ইউনিয়নের মিটাছড়ি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৮), জাফর আলমের ছেলে সওকত উল্লাহ (১৮), মুসা আলীর ছেলে ওসমাণ গনি (১৭), সাহাব মিয়ার ছেলে সাইফুল্লাহ (২৩), মোহাম্মদ আলীর ছেলে পারভেজ মোশাররফ (১৪), মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে নুরুল কবির (২৮), চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কবির হোসাইনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৪), শাহ আলমের ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহান (৩৫) ও চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা এলাকার জসিম উদ্দীনের ছেলে তারেক জিয়া (২৫)।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, মহেশখালীতে নিখোঁজের একটি তথ্য শোনা যাচ্ছে। তবে মরদেহ পচে যাওয়ায় শনাক্ত করা কষ্টকর।

ওসি জানান, মরদেহগুলো হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ছিল এবং পচে গেছে। সাগরে যাদের আত্মীয়-স্বজন নিখোঁজ আছে এ রকম বেশ কয়েকটি পরিবারের সদস্যরা এসেছিলেন শনাক্ত করতে, কিন্তু তারা কোনোভাবেই শনাক্ত করতে পারেননি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গভীর সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া ট্রলারটি আরেকটি মাছ ধরার ট্রলারের জালে আটকা পড়েছিল। ওই ট্রলারের জেলেরা রশি দিয়ে ডুবন্ত ট্রলারটি টেনে মহেশখালীর সোনাদিয়া চ্যানেলে নিয়ে আসেন। রোববার বেলা দেড়টার দিকে ডুবন্ত ট্রলারটি কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক (বিমানবন্দরের পশ্চিমে) চ্যানেলে পৌঁছালে মৃত ব্যক্তিদের হাত-পা ভেসে উঠতে দেখা যায়। তাতে ভয় পেয়ে যান টেনে আনা ট্রলারের জেলেরা। ডুবন্ত ট্রলারটি রেখে পালিয়ে যান তারা।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিজানুর রহমান বলেন, স্বজনদের দাবি অনুযায়ী আমরা ৪ জনের পরিচয় জানতে পেরেছি। কিন্তু যেহেতু মরদেহগুলো গলে গেছে তাই ডিএনএ টেস্টের সিদ্ধান্ত ছাড়া পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব নয়। তারপরও সোমবার দুপুরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আশিকুর রহমান বলেন, পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন না দেওয়ার কারণে মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত করতে পারেননি তারা।

পরে স্থানীয় লোকজন লাশবোঝাই ডুবন্ত ট্রলার ভেসে আসার খবর জানালে বেলা দুইটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা বেলা তিনটা পর্যন্ত ট্রলার থেকে ১০ জনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেন। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য লাশগুলো কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।