সুনামগঞ্জে বাড়ছে সুরমা নদীর পানি : দুর্ভোগে পৌরবাসী ও শহরতলীর মানুষ

সুনামগঞ্জে বাড়ছে সুরমা নদীর পানি : দুর্ভোগে পৌরবাসী ও শহরতলীর মানুষ

গত কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণ, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সুনামগঞ্জ জেলা শহরসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রোববার দুপুর পর্যন্ত সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে এবং ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

মুষলধারে বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পৌর প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসনের তড়িৎ সমন্বিত উদ্যোগে এই জলাবদ্ধতা থেকে পৌরবাসী দ্রুত মুক্তি চায়। বিশেষ করে শহরের দখলকৃত খাল পুনরুদ্ধার এবং খনন করা এখন এ শহরের মানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে। কাউকে দোষারোপে নয়, সবার সম্মেলিত সহযোগিতায় এখন জলাবদ্ধতা নিরসন করা অতি প্রয়োজন বলে মনে করেন পৌরবাসী।

জামাইপাড়া, বাঁধনপাড়া ,নতুনপাড়া, জামতলা, শিল্পকলা পয়েন্ট, ষোলঘর কাজির পয়েন্টসহ কিছু স্থানে খুবই বিষাদময় অবস্থা। বর্ষা মৌসুমে অল্প বৃষ্টিতে বাসা বাড়িতে পানি উঠা এখন নিত্যদিনের বিষয়। এই দুর্ভোগ থেকে পৌর নাগরিকরা মুক্তি চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি জানিয়েছে।

এদিকে সুনামগঞ্জের ছাতক পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার প্রধান নদী সুরমা, কুশিয়ারা, যাদুকাটা ও কালনী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, শান্তিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে এখন পানি বাড়তে শুরু করায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

অধিক বৃষ্টির কারণে সুনামগঞ্জ শহরের কাজির পয়েন্ট, উকিলপাড়া, নতুনপাড়া, বড়পাড়া সাহেববাড়ি ঘাট, ষোলঘর হাজিপাড়া, জামতলা, সুলতানপুর, পাঠানবাড়ি ও নবীনগরসহ পৌর এলাকার অধিকাংশ বাসাবাড়িতে বৃষ্টির পানি ঘরে উঠায় সাধারণ জনগণের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষজন বন্যার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

অপর দিকে জেলা শহরের সাথে বিশ্বম্ভরপুর, তাহিপুর ও দিরাই শাল্লার একমাত্র সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, এভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে মাঝারি বন্যার সৃষ্টি হতে পারে। তবে বড় ধরনের বন্যার কোনো আশঙ্কা আপাতত নেই।

এদিকে দুপুরে দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় আসন্ন বন্যা মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণের সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সকল জনপ্রতিনিধিকে নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী।