মানুষ গণতন্ত্র অর্জনের জন্য সকল প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামবে : রিজভী

মানুষ গণতন্ত্র অর্জনের জন্য সকল প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামবে : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এবার জনগণ অপশাসনের দিনের অবসান ঘটাবে। মানুষ গণতন্ত্র অর্জনের জন্য সকল প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামবে।

তিনি বলেছেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব যাই বলুন না কেন, অবৈধভাবে সশস্ত্র শক্তি প্রয়োগ করে আর ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না। দেশের জনগণ এবং বিশ্ববাসীর কাছে এটা স্বীকৃত যে অবৈধ সরকার গোটা দেশ অবৈধভাবে দখল করেছে। গত ১৪ বছর ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতের মৃত্যুর ঘটনা ছিল হাড়-হিম করা আতঙ্কের শিহরণ, জোরপূর্বক গুম, নারীর প্রতি সহিংসতা অতিমাত্রায় বৃদ্ধি, সাংবাদিক হত্যা, বেআইনী আটকের ও রহস্যজনক নিখোঁজের হিড়িকের মধ্য দিয়ে যেভাবে ওবায়দুল কাদের সাহেবরা দেশ চালিয়েছেন সেই প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী দেশ শাসনের অবসান ঘটাতে এবার জনগণ সর্বাত্মক প্রস্তুত আছে।

মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশটা আওয়ামী নেতাদের বাপ-দাদার জমিদারী নয়। এরা আক্রমণাত্মক ভাষায় শিষ্টাচার ও বিনয়কে বিদায় দিয়েছে। যখন যা ইচ্ছে সেটা করবেন এবং বলবেন সেই দিন শেষ হয়ে আসছে। দেশের জনগণকে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর কাছে কৃপাপ্রার্থী বানানোর চেষ্টার অবসান ঘটিয়ে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে।

ঈদের আগে ও পরে বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার তথ্য তুলে ধরে রিজভী বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নিজ নিজ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য সশস্ত্র সহিংসতায় এক বিভীষিকাময় পরিবেশ তৈরি করেছে। তাদের উগ্রতা, নিমর্মতা ও হিংস্রতার এক পৈশাচিক প্রকাশে ফলশ্রুতিতে রক্তাক্ত হয়েছে এলাকার পর এলাকা। বিরোধী দলের অস্তিত্ব মুছে দেয়ার জন্য মনে হয় তারা শপথ করে মাঠে নেমেছে। সন্ত্রাসকে তারা অমোঘ অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। বহুদলীয় গণতন্ত্র যাতে ফিরে না আসে সেই জন্য সন্ত্রাস তাদের রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় অর্থনীতিকে লুটপাট করে বিদেশে সুখে-শান্তিতে থাকার জন্য আবাসস্থল বানিয়ে চিরদিন আরাম-আয়েশে থাকার জন্য গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে গোটা জাতিকে বন্দি করেছে। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার এখন চরম দুর্দশাগ্রস্থ যেহেতু তাদের আগ্রহ দুর্নীতি আর টাকা পাচার সে কারণে লুটপাট ও বেপরোয়া দুর্বিনীত কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল ও জনগণের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে। মানুষের সম্পদ ও সম্পত্তির নিরাপত্তা সম্পূর্ণরূপে আওয়ামী ক্যাডারদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে। কায়েমি স্বার্থে আঘাত লেগেছে বলেই গত পরশু থেকে গতকাল পর্যন্ত কুষ্টিয়া, নড়াইল ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর সশন্ত্র আক্রমণ চালিয়ে রক্ত ঝরিয়েছে। এই সরকারি মদদপৃষ্ট সন্ত্রাসীদের হাতে এখন বৈধ-অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, আমিনুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, তারিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ।