নোয়াখালীতে মা ও শিশুকন্যাকে ধর্ষণ : আসামি হারুন গ্রেফতার

নোয়াখালীতে মা ও শিশুকন্যাকে ধর্ষণ : আসামি হারুন গ্রেফতার

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মা (৩০) ও শিশুকন্যাকে (১২) ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলার এজহারভুক্ত আসামি মো: হারুনকে (৪২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার গাবতলী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

চরজব্বর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেফতারকৃত মো: হারুন সুবর্ণচর উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের চর কাজী মোখলেছ গ্রামের মৃত বশির আহম্মদের ছেলে।

এর আগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি আবুল খায়ের ওরফে মুন্সী মেম্বার (৫০) ও তার সহযোগী মেহরাজকে (৪৮) গ্রেফতার করে পুলিশ।

গতকাল বুধবার দুপুরে নোয়াখালী পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গৃহবধূকে ধর্ষণ করতেই চুরির নাটক সাজিয়েছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি আবুল খায়ের ওরফে মুন্সী মেম্বার (৫০)। তার সহযোগী হিসেবে ছিল হারুন (৪২) ও মেহরাজ (৪৮)। গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে মুন্সী মেম্বার ও হারুন। পাশের ঘরে থাকা শিশুটিকে ধর্ষণ করে মেহরাজ।

প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে, হারুনের সহযোগিতায় ওই নারীকে খাট হতে টেনে হিঁচড়ে নিচে নামিয়ে পায়ের বাঁধন খুলে ধর্ষণ করে আবুল খায়ের মুন্সী। এরপর হারুন তাকে ধর্ষণ করে। এই সময় মেহরাজ পাশের রুমে থাকা ওই নারীর শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে। ফিরে যাওয়ার সময় নারীর কানে থাকা স্বর্ণের দুল ও ঘরে থাকা নগদ টাকা নিয়ে যায়। পরে শিশুটির হাতের বাঁধন খুলে দেয় এবং ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু বললে তাদের প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকি ধমকি দেয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো বলা হয়েছে, মূলত হারুন গৃহবধূর বসতঘরে মালামাল আছে বলে মেহেরাজকে চুরি করতে ইন্ধন যোগায়। মেহরাজ রাজি হলে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে। পরে হারুনের সাথে মুন্সী মেম্বারকে দেখে মেহরাজ অবাক হয় এবং বুঝতে পারে ধর্ষণ করতেই তাকে দিয়ে চুরির নাটক সাজায়।

এদিকে সিঁধ কেটে মা-শিশুকন্যাকে গণধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার হওয়া প্রধান আসামি চরওয়াপদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের ওরফে মুন্সী মেম্বারকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চরকাজী মোখলেছ গ্রামের মৃত গোলাপের রহমানের ছেলে এবং চরওয়াপদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী গৃহবধূর (৩০) স্বামী পেশায় একজন দিনমজুর। তিনি তিন-চার দিন পর পর বাড়িতে আসেন। তাকে কাজের জন্য প্রায় বাইরে থাকতে হয়। ভুক্তভোগী গৃহবধূর ভাষ্যমতে এ সুযোগে সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ২টা থেকে ২টার মধ্যে তার বসত ঘরের সিঁধ কেটে তাকে এবং তার মেয়েকে ধর্ষণ করে তিনজন। এর মধ্যে তাকে ধর্ষণ করে দু’জন আর তার মেয়েকে ধর্ষণ করে একজন।

নির্যাতিতার স্বামী জানান, মুন্সী মেম্বার কিছু দিন আগে তার স্ত্রীকে পোড়া মোরগ খাওয়ানোর প্রস্তাব দেয় এবং বিপদ আপদে পড়লে সহযোগিতার কথা বলে। কিন্তু তার স্ত্রী ওই প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় মুন্সী মেম্বার তার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ফোন করে উক্ত্যত করত। পরে মোবাইল নম্বর ব্লক করে দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এসব ঘটনার জের ধরে তারা এ ঘটনা ঘটায়।