অস্ত্র মামলায় ফরিদপুরের আলোচিত রুবেলসহ দুজনের ১০ বছর কারাদণ্ড

অস্ত্র মামলায় ফরিদপুরের আলোচিত রুবেলসহ দুজনের ১০ বছর কারাদণ্ড

অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের একটি মামলায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান ওরফে রুবেল (৪৯) ও তার সহযোগী রেজাউল করিম ওরফে বিপুলকে (৩৮) দুটি ধারায় মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৮৭৮ সালের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ (এ) ধারায় পিস্তল রাখার দায়ে দুজনকে ১০ বছর করে এবং গুলি রাখায় একই আইনের ১৯ (এফ) ধারায় ৭ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেন বিচারক। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আসামিরা দুটি ধারার সাজা একসঙ্গে ভোগ করতে পারবেন।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নওয়াব আলী রায়ের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ রায়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে। ক্ষমতার ছত্রছায়ায় থেকে অপরাধ করেও যে পার পাওয়া যায় না, এ রায়ে সেই সত্য প্রমাণিত হলো।

ফরিদপুরে বিতর্কিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আলোচিত দুই ভাই শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ফরিদপুর প্রেসক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেল। তারা ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার মামলায় ২০২০ সালের জুনে দুই ভাই গ্রেপ্তার হন। ওই সময়ে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই ভাই ও তাঁদের সহযোগী রেজাউল ইসলামসহ মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ওই সময় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে সাজ্জাদ হোসেন, ইমতিয়াজ হাসান ও রেজাউলের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়। এর মধ্যে একটি অস্ত্র মামলার আসামি হচ্ছেন সাজ্জাদ হোসেন ও ইমতিয়াজ হাসান। অপর একটি অস্ত্র মামলায় আসামি হচ্ছেন ইমতিয়াজ হাসান ও তাঁর সহযোগী রেজাউল করিম। এই দুটি মামলা ছাড়াও মানি লন্ডারিংসহ বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে মোট ১১টি মামলা করা হয়। এর মধ্য অস্ত্র মামলাতে প্রথম বিচারকাজ শেষে রায় ঘোষণা করা হলো।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৭ জুন দিবাগত রাতে ফরিদপুর শহরের শ্রী অঙ্গন মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ একটি পিস্তল ও দুটি গুলিসহ রেজাউল করিমকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল জব্বার বাদী হয়ে রেজাউল করিমকে আসামি করে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেন। পরে এই মামলায় আসামি ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে ইমতিয়াজ হাসানের নাম উল্লেখ করেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ হাসান তদন্ত করে রেজাউল করিম ও ইমতিয়াজ হাসানকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ইমতিয়াজ হাসান আগে থেকেই কারাগারে ছিলেন। রেজাউল করিম জামিনে ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে দুজনকে পুলিশ পাহাড়ায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।