টেকনাফ সীমান্তে সতর্ক পাহারায় বিজিবি

টেকনাফ সীমান্তে সতর্ক পাহারায় বিজিবি

মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে গতকাল মঙ্গলবারও টেকনাফ সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), কোস্টগার্ড ও পুলিশ সদস্যদের সতর্ক পাহারায় দেখা গেছে।

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার উত্তরাংশে এবং পূর্ব ও দক্ষিণাংশের ওপারে মিয়ানমার সীমান্তে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে সারা দিনে কয়েকটি বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো ধরনের গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি।

২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সংঘর্ষ চলছে। ৫ ফেব্রুয়ারি নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী গ্রামের একটি রান্নাঘরের ওপর মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে দুজন নিহত হন।

নিহত দুজনের মধ্যে একজন বাংলাদেশি নারী, অন্যজন রোহিঙ্গা পুরুষ। সংঘর্ষ চলাকালে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যসহ সে দেশের ৩৩০ জন এদেশে ঢুকে পড়েন। ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে তাদের মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী ও সাবরাং ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম জনান, সোমবার সারা দিন থেমে থেমে বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেলেও রাতে নীরবতার মধ্যে কেটেছে। মঙ্গলবার দিনের বেলায়ও কোনো শব্দ শোনা যায়নি।

সাবরাং ইউনিয়নের নয়াপাড়ার বাসিন্দা সৈয়দ আলম ও শাহপরীর দ্বীপ বাজারপাড়ার আবদুল জলিল জানান একই কথা। হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উলুবনিয়ার বাসিন্দা জালাল আহমদ বলেন, এখন সীমান্ত শান্ত দেখা যাচ্ছে। আগের মতো বিস্ফোরণ ও বিকট শব্দ নেই।

স্থানীয় লোকজন জানান, টেকনাফ সীমান্তের উত্তরাংশে হোয়াইক্যং এবং পূর্ব ও দক্ষিণাংশে সাবরাংয়ের বিপরীতে রাখাইন রাজ্য। কয়েক দিন ধরে ওই সব স্থান থেকে গুলির শব্দ আসছিল। স্থানীয় লোকজনের ধারণা, রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের পাশের বলিবাজার, মেগিচং, কাদিরবিল, নুরুল্লাহপাড়া, মাংগালা, নলবন্ন্যা, ফাদংচা ও হাসুরাতা এলাকায় সে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর লড়াই চলছে।

গতকাল সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট ও টেকনাফ জেটিঘাট এলাকায় অবস্থান করে কোনো গুলির শব্দ পাওয়া যায়নি।

সরেজমিন দেখা গেছে, বিজিবি-কোস্টগার্ড নাফ নদীর সীমান্তে তাদের টহল জোরদার করেছে। আর সীমান্তের স্থলভাগে পুলিশের টহল ও চারটি বিশেষ দলকে কাজ করতে দেখা গেছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তারা পাহারা জোরদার করেছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী বলেন, সীমান্তের বাসিন্দারা মঙ্গলবার কিছুটা স্বস্তিতে ছিলেন। তবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্ত ও আশপাশের এলাকায় টহল অব্যাহত রয়েছে।