ভারতে কৃষকদের আন্দোলনে গুলি, নিহত ১

ভারতে কৃষকদের আন্দোলনে গুলি, নিহত ১

ভারতে আন্দোলনরত কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযান চলাকালীন বুধবার পাঞ্জাব-হরিয়ানার সীমান্তে অবস্থিত খনৌরিতে এক কৃষকের মৃত্যুকে ঘিরে বিক্ষোভ আরো ঘনীভূত হয়েছে।

ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে (এমএসপি) আইনি নিশ্চয়তা ও অন্যান্য দাবিতে আন্দোলনে থাকা কৃষকদের অভিযোগ, ২১ ফেব্রুয়ারি খনৌরি সীমান্তে পুলিশের গুলিতে নিহত হন শুভকরণ সিং নামে ওই কৃষক।

হরিয়ানা পুলিশ অবশ্য গুলি করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

আপাতত দু’দিন ‘দিল্লি চলো’ অভিযান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কৃষক সংঠনের নেতারা।

পাটিয়ালা জেলার রাজিন্দরা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক হরনাম সিং রেখি মৃত্যুর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে বলা যেতে পারে মাথার পেছনে গুলি লাগার কারণে হয়েছে। তবে চূড়ান্ত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিষয়টা আরো জানা যাবে।’

তবে, ২২ বছর বয়সী শুভকরণ সিংকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে, মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসার পরই বুধবার বিকেলে হরিয়ানা পুলিশ বিবৃতি জারি করে বলেছে, ‘এ পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, কোনো মৃত্যুর খবর আমরা জানি না। খনৌরি সীমান্তে দুই পুলিশ এবং এক আন্দোলনকারীর আহত হওয়ার খবর আমরা জানি।’

এদিকে, এই মৃত্যু নিয়ে কর্তৃপক্ষ পরস্পরের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান অবশ্য ক্ষোভ দেখিছেন হরিয়ানা প্রশাসনের বিরুদ্ধে।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে পাওয়ার পর পাঞ্জাব সরকার এফআইআর দায়ের করবে এবং অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে।

এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করে, সম্মিলিত কিষাণ মোর্চা অভিযোগ করেছে, ‘বর্তমান সঙ্কট এবং এক ব্যক্তির মৃত্যুর জন্য শুধুমাত্র মোদি সরকার দায়ী।’

কে এই শুভকরণ সিং?
পাঞ্জাবের ভাতিন্ডার বাসিন্দা শুভকরণ সিং কৃষক আন্দোলনে সামিল ছিলেন। তার নিকট আত্মীয় জসবীর সিংয়ের সাথে খনৌরি সীমানাতে আন্দোলনকারীদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

ঘটনার সময় যে অংশে আন্দোলনকারী এবং পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, তার থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে একটি ক্ষেতে দাঁড়িয়েছিলেন শুভকরণ সিং।

জসবীর সিং বলেন, ‘তারপর হঠাৎ একটা গুলি এসে লাগে আর মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ও।’

শুভকরণ সিংয়ের কাকা বলজিৎ সিং বলেন, ‘আমি ওকে ১৯ ফেব্রুয়ারি ফোন করে বাড়ি ফিরে আসতে বলেছিলাম। রাজি হয়নি। বলেছিল দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছে তবেই ফেরত আসবে।’

তবে, হরিয়ানা পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর অত্যধিক বলপ্রয়োগের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বরং বিক্ষোভকারীদের হামলায় এখন পর্যন্ত ১২ জন পুলিশ আহত হয়েছে বলে অভিযোগ করছে তারা।

এদিকে, এ মৃত্যুকে ঘিরে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী, তৃণমূল কংগ্রেসের মমতা বন্দোপাধ্যায় বিজেপির কঠোর সমালোচনা করেছেন।

আন্দোলনকারীদের ও পুলিশের সংঘর্ষ
বুধবার আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে দফায় দফায় আবারো রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের মধ্যবর্তী শাম্ভু ও খনৌরি সীমানা। বেলা ১১টার দিকে শাম্ভু সীমান্ত উত্তাল হয়ে ওঠে। একই রূপ দেখা যায় খনৌরিতেও।

সরকারি সংস্থাগুলোর আগামী পাঁচ বছর ন্যূনতম সমর্থন মূল্যে (এমএসপি) নির্দিষ্ট কয়েকটি ফসল কেনার কেন্দ্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সোমবার সন্ধ্যায় কৃষক নেতারা ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে তাদের ‘দিল্লি চলো’ পদযাত্রা আবার শুরু করার ডাক দিয়েছিলেন।

তার আগে দু’দিন ‘অস্থায়ীভাবে স্থগিত’ ছিল ওই অভিযান।

সেই কর্মসূচি মেনে শাম্ভু সীমান্তে হাজার হাজার ট্র্যাক্টর, ট্রলি, ক্রেইন নিয়ে পুলিশের ব্যারিকেড আর কড়া নিরাপত্তা বলয়ের দিকে আন্দোলনকারীরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই তাদের ছত্রভঙ্গ করতে দফায় দফায় টিয়ার শেল ফাটানো হয়। ড্রোনের মাধ্যমে ফেলা হয় ওই টিয়ার শেল। মুহূর্তে ধোঁয়ায় ভরে যায় ওই এলাকা।

প্রায় ৪০ মিনিট পর থেমে যায় টিয়ার শেল ছোঁড়া-সহ অন্যান্য প্রতিরোধের কৌশল। এরপর কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে পঞ্চম দফা বৈঠকের আবেদন জানানো হয়।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘পঞ্চম দফা বৈঠকের জন্য আর্জি জানাচ্ছি। সরকার চায়, বিষয়টির শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হোক। তৎকালীন এবং দীর্ঘমেয়াদি, দু’দিক থেকেই যেন একটা সমাধান পাওয়া যায় এটাই আমরা চাই।’

কৃষকদের দাবি কী?
এই আন্দোলনে কৃষকদের মূল দাবিগুলো হলো ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তা (এমএসপি), কৃষি ঋণ মওকুফ এবং স্বামীনাথন কমিশনের সমস্ত সুপারিশ বাস্তবায়ন, পুলিশ মামলা প্রত্যাহার এবং লখিমপুর খেরি সহিংসতার শিকারদের জন্য ন্যায় বিচারের জন্য আইনি নিশ্চয়তা ইত্যাদি।

একই সাথে জানানো হয়েছিল চতুর্থ দফা বৈঠকে যে কয়টি শস্য কেনার কথা বলা হয়েছিল তার পরিবর্তে সবক’টি শস্যকে তার আওতায় আনতে হবে। এমএসপিকে আইনিভাবেও নিশ্চিত করতে হবে।

সেই বিষয়গুলোর উল্লেখ করে বুধবার কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা বলেন, ‘এমএসপি, শস্যের বৈচিত্র, এফআইআর (কৃষকদের বিরুদ্ধে যে মামলা রয়েছে)-সহ সমস্ত বিষয়ে আমরা কথা বলতে প্রস্তুত। শান্তিপূর্ণভাবে আলাপ আলোচনা হোক।’

সরকারের পক্ষ থেকে বৈঠকের কথা জানানো হলে কিছুক্ষণের জন্য রূপ বদলে যায় শাম্ভু সীমান্তে।

পাঞ্জাব কিষান মজদুর সংগঠনের নেতা সরওয়ান সিং পান্ধের বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’

কৃষক নেতারা নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনায় বসেন। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে পরিস্থিতির বদল হয় আবারো।

আন্দোলনকারীদের মধ্যে একাংশ এগোনোর চেষ্টা করলেই তাদের ওপর আবার টিয়ার শেল ছোঁড়া হয়। আবারো রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় শাম্ভু সীমানা।

খনৌরিতে সীমান্তে দফায় দফায় টিয়ার শেল ছোঁড়া হয়। পরিস্থিতি ক্রমশ আরো উত্তাল হয়ে ওঠে।

দিল্লি চলো
এর আগে চণ্ডীগড়ে রোববার রাতে চতুর্থ দফায় আন্দোলনকারীদের সাথে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা, কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই প্রমুখ।

কৃষক নেতাদের সাথে চতুর্থ দফা আলোচনায় কেন্দ্র সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, পাঁচ বছরের জন্য এমএসপিতে ডাল, ভুট্টা এবং তুলা কিনবে সরকার। কৃষক নেতারা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এটা কৃষকদের পক্ষে নয়। একই সাথে তারা এমএসপিকে আইনি নিশ্চয়তা দেয়ার দাবিতে অনড় থাকেন।

এদিন (বুধবার) সকালে ‘দিল্লি চলো’ অভিযান শুরুর আগে সাংবাদিকদের উদ্দেশে পাঞ্জাব কিষান মজদুর সংগঠনের নেতা সরওয়ান সিং পান্ধের বলেন, ‘প্রতিটি বিষয়ে আমাদের বৈঠক হয়েছে। এখন কেন্দ্রকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

সরওয়ার সিং জানান, কৃষক সংগঠন শান্তিপূর্ণভাবে দিল্লি অভিযান চালাতে চায়। তারা চান না এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হোক যাতে কৃষকরা নিজেদের ধৈর্য হারায়।

ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট জগজিৎ সিং ঢালিওয়াল বলেন, ‘আমরা অশান্তি সৃষ্টি করতে চাই না। কৃষকরা দিনরাত পরিশ্রম করে, তাদের রুখতে বড় বড় ব্যারিকেড দেয়া ঠিক নয়।’

শাম্ভু সীমান্ত যে সময় পুলিশ ও কৃষকের সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে উঠেছিল, ওই সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে পঞ্চম দফা ‘আলাপ আলোচনার’ কথা জানানো হয়। আবেদন জানানো হয় কৃষক সংগঠনের নেতাদের বৈঠকে বসার।

এদিকে, কেন্দ্র সরকারের সেই সিদ্ধান্তের কথা সীমান্তে মোতায়েন পুলিশ বারবার ঘোষণা করতে থাকে। এরপর এক সময় কিছুক্ষণের জন্য শাম্ভু সীমান্তে থেমে যায় সংঘর্ষ। কৃষক নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে সরকারের আবেদনের ওপর আলোচনা করেন।

কৃষক নেতা সরওয়ান সিং বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে কোনো কৃষক, যুবক এগোবে না। নেতারা এগিয়ে যাবেন। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে যাব। নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন বাহিনীর ওপর আমরা কিছুতেই আক্রমণ করব না। ওরা (সেনা বাহিনী) আমাদের (দেশের) অংশ। আমরা খালি হাতে এগোব।’

কিন্তু পরিস্থিতি ঘণ্টা খানেকের মধ্যে আবার বদলায় শাম্ভু সীমান্তে।

পরিস্থিতি যে গুরুতর হয়ে উঠতে পারে সে বিষয়ে ধারণা করেছিলেন অনেকেই। এক দিকে আন্দোলনের নবম দিনে দাঁড়িয়ে একথা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা যে তারা কোনো মতেই পিছু হটবেন না।

তবে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সচেষ্ট ছিল প্রশাসন।

‘দিল্লি অভিযান’ শুরুর আগে বুধবার সকালে কৃষক নেতা সরওয়ান সিং বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের অনুরোধ ব্যারিকেড তুলে নিয়ে আমাদের যেন এগোনোর অনুমতি দেয়া হয়।’

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সাথে আলোচনার পর দু’দিন ‘দিল্লি চলো’ অভিযান সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার পর বুধবার আরো একবার দিল্লির উদ্দেশে রওয়ানা দেয়ার কথা আগেই জানিয়েছিলেন আন্দোলনরত কৃষক সংগঠনের নেতারা।

শাম্ভু সীমান্তে ইতোমধ্যে অবস্থানরত বিক্ষুব্ধ কৃষকদের সাথে যোগ দেয় আরো কৃষক। এর আগে পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের প্রতিটি গ্রাম থেকে অন্তত ১০০ জনকে এই আন্দোলনে যোগ দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন প্রতিবাদী সংগঠনের নেতারা।

সেই কথা মেনে মঙ্গলবার রাত থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে শাম্ভু সীমান্ততে।

ট্র্যাক্টর, ক্রেইন ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনের কথা জানিয়েছিল হরিয়ানা প্রশাসন। সীমান্তে সে বিষয়ে বারবার সতর্কবার্তা ঘোষণাও করা হয়। যদিও তা উপেক্ষা করে সীমান্তগুলোতে এসে জড়ো হতে থাকে বড় বড় ট্র্যাক্টর, ট্রলি ও ক্রেইন।

হরিয়ানা পুলিশের এআইজি মনীষা চৌধুরী ভিডিও বিবৃতি জারি করে বলেন, ‘হরিয়ানা পুলিশ কৃষকদের কাছে ভারি মেশিনারি, যেমন জেসিবি, পোকলেন ইত্যাদি ব্যবহার না করার আবেদন জানাচ্ছে।’

একই সাথে এ ধরনের মেশিন যারা বিক্রি করে বা ভাড়ায় দেয় তাদেরও সতর্ক করা হয়। জানানো হয়, আন্দোলনকারীদের মেশিনগুলো ভাড়া দিলে প্রশাসন ওই ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নেবে।

এর আগে, হাইকোর্টের তরফে জানানো হয় যে যাতায়াতের জন্য আন্দোলনকারীরা রাজপথে ট্র্যাক্টর, ট্রলি বা ক্রেইনের মতো ভারি যন্ত্র নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। হরিয়ানার পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে আন্দোলনকারীদের যেকোনো পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণের কথা লিখিতভাবেও জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, পাঞ্জাবে ক্ষমতায় রয়েছে আম আদমি পার্টি। হরিয়ানায় বিজেপি সরকারের পুলিশের কড়া দমন নীতি ও ড্রোনের ব্যবহারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল পাঞ্জাব সরকার।

অন্য দিকে, শাম্ভু, গাজিপুর, টিকরি-সহ বিভিন্ন সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছিল বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‍্যাফ ও অ্যান্টি রায়ট ভেহিকেল। কংক্রিট, লোহা দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল ব্যারিকেড।

বহুস্তরীয় নিরাপত্তা ঘেরাটোপ তৈরি করতে কংক্রিটের ব্যারিকেডের ওপর কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হয়েছিল। রাখা হয়েছিল বিশালায়তনের কন্টেনার।

পুলিশের ডেপুটি কমিশনার জিমি চিরাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে আধাসামরিক কর্মীদের পাশাপাশি পর্যাপ্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তা কর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, কোনো একজন বিক্ষোভকারীকেও বা একটি গাড়িকেও দিল্লিতে প্রবেশ করতে না দিতে।

তিনি আরো বলেন, ‘মক সিকিউরিটি ড্রিল পরিচালনা করা হয়েছিল। দিল্লি পুলিশ ইতোমধ্যেই ৩০ হাজার টিয়ার গ্যাসের শেল মজুত করেছে।’

‘অতি সংবেদনশীল’ হিসেবে চিহ্নিত শাম্ভু সীমান্তে নিরাপত্তা ছিল আরো কড়া।

ইস্টার্ন রেঞ্জের অতিরিক্ত সিপি সাগর সিং কালসি বলেন, ‘আমরা গাজিপুর সীমান্তে রয়েছি। আমরা উত্তরপ্রদেশে দিল্লি-সংলগ্ন জেলা গাজিয়াবাদ ও নয়ডায় পুলিশের সাথে যোগাযোগ রাখছি। গাজিপুরে আসা কৃষকদের সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য আপাতত নেই। কিন্তু আমাদের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হলো এলাকায় শান্তি বজায় রাখা।’

টিয়ার শেলের হাত থেকে বাঁচতে এদিন তাদের মুখে গ্যাস মাস্ক, গগলস, সুরক্ষার জন্য হেলমেট পরতে দেখা যায়। ড্রোনের মোকাবিলা করতে বুধবারও কৃষকদের অনেকের হাতে দেখা যায় ঘুড়ি এবং কড়া মাঞ্জা। পেরেক থেকে বাঁচতে সুরক্ষার জন্য ভারি বালির বস্তাও মজুদ করেছিলেন তারা।

বিরোধীরা যা বলছেন
আম আদমি পার্টি (আপ) যে কৃষকদের ‘পক্ষে’ সে কথা প্রথমদিনই স্পষ্ট করেছিলেন দলের নেতারা। প্রসঙ্গত, দিল্লি ও পাঞ্জাবে আপ সরকার ক্ষমতায় রয়েছে আর মাঝে হরিয়ানাতে ক্ষমতায় আছে বিজেপি।

আপ নেতা গোপাল রাই বলেন, ‘প্রতিটি সংগঠনের দেশে গণতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিবাদের অধিকার রয়েছে। দু’বছর আগে, কেন্দ্রীয় সরকার তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে কৃষকদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে এটি এমএসপি নিয়ে একটি আইন আনবে। এ বিষয়ে একটি কমিটিও গঠন করা হলেও কোনো কাজ হয়নি। এই সংসদের শেষ অধিবেশনও শেষ হয়েছে কিন্তু সরকার কিছু করেনি যার ফলে কৃষকরা তাদের বিক্ষোভ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

আগামী লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতায় এলে এমএসপিকে আইনি নিশ্চয়তা দেয়ার ঘোষণা আগেই করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।

এদিন তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের (কৃষকদের) সমর্থন করছি। আমরা প্রকাশ্যে বলছি যে তাদের যুক্তিসঙ্গত দাবিগুলো পূরণ করা উচিত। আমরা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে একে আইনি গ্যারান্টি দেয়ার কথা উল্লেখ করব। সমস্ত ফসল এর আওতায় আনা যাবে না তবে প্রয়োজনীয় ফসলগুলো অবশ্যই থাকবে।’ সূত্র : বিবিসি