টেকনাফ সীমান্তে রাতভর থেমে থেমে গোলার শব্দ

টেকনাফ সীমান্তে রাতভর থেমে থেমে গোলার শব্দ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল ও গুলির শব্দ কক্সবাজারে টেকনাফের হোয়াইক্যং ও হ্নীলা ইউনিয়ন সীমান্তের লোকজন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে্ন। শনিবার (২ মার্চ) রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত টেকনাফের কয়েকটি পয়েন্টে সীমান্তে ভারী মর্টার শেলের শব্দ পাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সীমান্তের লোকজন জানায়, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর সাথে আরাকান আর্মিদের সঙ্গে চলছে সংঘর্ষ। এতে টেকনাফের হোয়াইক্যং উত্তর পাড়া, লম্বাবিল, উনচিপ্রাং,কাঞ্জর পাড়া, হ্নীলা মোলভী পাড়া, ওয়াব্রাং, ফুলের ডেইল, চৌধুরী পাড়া, জালিয়া পাড়া এলাকায় সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গুলি ও মর্টার শেলের শব্দ পাওয়া গেছে। হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের পূর্বে মিয়ানমার কুমিরহালি, নাইচদং, কোয়াংচিগং, শিলখালী, নাফপুরা এই গ্রামগুলোতে গৃহযুদ্ধ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদীতে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা টহল বৃদ্ধি করেছেন।

রাতে থেমে থেমে গোলার শব্দ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, রাতে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার থেকে থেমে থেমে ভারী মর্টার শেলের শব্দ শুনতে পাই। এসব গোলার শব্দ এখন নিয়মিত ঘটনার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ চলমান রয়েছে।

হ্নীলা সীমান্তের বসবাসকারী মো. ইলিয়াস বলেন, রাতভর থেমে মিয়ানমারের ভারী গোলার শব্দ আমার বাড়ি থেকে পাওয়া যাচ্ছে। মাঝে মধ্য এমন ভারী শব্দ পাওয়া যায় যে ভয়ে রাতের ঘুম ভেঙে যায়।

টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম বলেন, সীমান্তে গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। লোকজনকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।

এদিকে শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তে গোলার শব্দ পাওয়া না গেলেও এখনো দ্বীপের জেটি ঘাটে মানুষ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার দোকানি মো. নাছির। তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে এই সীমান্তে কোন গুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। নাফনদে কোস্ট গার্ড এবং সীমান্তে বিজিবি টহল রয়েছে। কিন্তু জেটিঘাট বন্ধ থাকায় আমাদের ব্যবসার ব্যাপক লোকসান হচ্ছে।

এদিকে এখনও মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। এতে অনুপ্রবেশকালে ইতিমধ্যে প্রায় চারশ' জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠিয়েছিল সীমান্তে দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এ বিষয়ে কোস্ট গার্ড চট্টগ্রাম পূর্ব জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তাহসিন রহমান বলেন, ওপারের চলমান যুদ্ধের পরিস্থিতিতে নাফনদ দিয়ে সীমান্তে অনুপ্রবেশের সম্ভবনা থেকে আমরা (কোস্ট গার্ড) নাফনদে টহল জোরদার রেখেছি। নতুন করে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা ইতিমধ্যে দুইশতাধিকের বেশি অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাকে প্রতিহত করেছি।

টেকনাফ পৌরসভার নাফ নদের কাছাকাছি বসবাসকারী মোহাম্মদ ইসলাম বলেন রাতে থেমে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের বশিপাড়া (বকশিপাড়া) থেকে গোলার বিকট শব্দ আসছে। অনেক সময় ভারী গোলার শব্দে মনে হয় ভূমিকম্প হচ্ছে।