বিনা চ্যালেঞ্জে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দেয়া হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিনা চ্যালেঞ্জে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দেয়া হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টিকারী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) উদ্দেশ্যে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বলেন, কোনো অবস্থাতেই বিনা চ্যালেঞ্জে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দেয়া হবে না। সরকার পার্বত্য এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে দেবে না। যেকোনো মূল্যে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা হবে।

শনিবার বিকালে বান্দরবান সার্কিট হাউসে পার্বত্য এলাকার আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে মন্ত্রী কেএনএফ’র চালানো সন্ত্রাসী হামলার স্থাপনাসমূহ পরিদর্শন করেন।

কেএনএফের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী সামরিক বাহিনীর প্রধানকে নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানান আসাদুজ্জামান খান। বলেন, তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে বান্দরবান এক সময় খুব শান্তিপ্রিয় ছিল। কিন্তু সম্প্রতি সশস্ত্র ব্যক্তিরা ব্যাংক ডাকাতির মতো বড় ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। এর আগেও গোষ্ঠীটি বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকবার সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায়। এসব কার্যক্রম আমরা আর বিনা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেবো না। এদের পেছনে কোনো ইন্ধন আছে কিনা তাও বের করা হবে।

তিনি আরও বলেন, একটি সশস্ত্র সংগঠন তাদের অবস্থান জানান দেয়ার জন্য এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা মনে করি, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গিয়ে অপরাধ করেছে। কাজেই রাষ্ট্র চুপ থাকতে পারে না, আমরা এ জন্য যা যা করণীয় তা করবো। আইনশৃঙ্খলার জন্য আমরা পুলিশ, র‍্যাব, আনসার সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি করবো, সীমান্তে বিজিবি বৃদ্ধি করবো।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, প্রথমে পুলিশ, র‍্যাব, আনসার ও বিজিবি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যা যা প্রয়োজন তাই করবো।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোনো ধরনের অস্ত্রধারীকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে থাকতে দেয়া হবে না। আমরা অনেক ধৈর্য নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি; বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তাদের সঙ্গে দু’বার আলোচনায় বসেছেন। কিন্তু আলোচনায় না গিয়ে তাদের অবস্থান জানান দেয়ার জন্য তারা এই ধরনের কর্মকাণ্ড করেছে। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারা যদি বিদেশেও আশ্রয় নেয়, আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাদের দেশে ফেরত এনে বিচারের ব্যবস্থা করবো।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের সরকার, জনগণ চাইলে কেএনএফ’র সঙ্গে আবারো শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সংলাপ হতে পারে। এ ছাড়াও ব্যাংক ডাকাতির মতো ঘটনায় কোনো সংস্থার দায়িত্ব পালনে কোনো ঘাটতি বা গাফিলতি ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতবিনিময় সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা, বান্দরবানের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব (জননিরাপত্তা বিভাগ) মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিজিবি’র প্রধান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মাহাবুবুর রহমান, আনসার ভিডিপি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক, বান্দরবান রিজিয়ন কমান্ডার মো. মেহেদি হাসান, বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মুজাহিদ উদ্দিন ও পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন উপস্থিত ছিলেন।