গাড়ি থামিয়ে বাবার লাইসেন্স পরীক্ষা করলেন মেয়ে

গাড়ি থামিয়ে বাবার লাইসেন্স পরীক্ষা করলেন মেয়ে

ঢাকা, ৩ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : রাজধানীর উত্তরা এলাকায় স্ত্রী দেবীকে নিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন অমি গাফফার নামের এক ব্যক্তি। পথিমধ্যে উত্তরার মাস্টার মাইন্ড স্কুলের শিক্ষার্থীরা গাড়ির গতিরোধ করে। এরপরে শিক্ষার্থী তার ড্রাইভিং লাইসেন্স যাচাই করতে আসে সে আর কেউ না, তাদের মেয়ে মেয়ে রাইসা। ঘটনাটি সিনেম্যাটিক মনে হলেও সত্য। এরপর বাবা হাসিমুখে মেয়ের হাতে লাইসেন্স তুলে দেন।

মেয়ে দক্ষ ট্রাফিক সার্জেন্টের মতো মনোযোগ দিয়ে লাইসেন্স যাচাই করে বাবার হাতে ফেরত দেয়। মনে হচ্ছিল না এটা বাবা-মেয়ের ঘটনা। মনে হচ্ছিল একজন গাড়ি চালক ও একজন সার্জেন্টের নিয়মিত আচরণ। এমন একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।

বিষয়টির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত করেন অমির স্ত্রী ও রাইসার মা দেবী গাফফার। তিনি বলেন, আমরা রাজধানীর উত্তরার খালপাড় এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলাম। এসময় শিক্ষার্থীরা আমাদের গাড়ির গতিরোধ করে। আমাদের লাইসেন্স চেক করতে যে আসে সে আমাদের মেয়ে রাইসা গাফফার। বিষয়টিতে খুব অবাক হয়েছি। তাদের দায়িত্ববোধ ভালো লেগেছে।

প্রসঙ্গত, রবিবার দুপুরে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনের বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। বাসচাপায় আহত হন আরো ১৩ জন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। নিহত একজনের নাম আবদুল করিম, তিনি শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। নিহত অপরজন একই কলেজের আরেক শিক্ষার্থী দিয়া খানম ওরফে মীম। তিনি একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, ঘটনাস্থলের পাশেই শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ। ঘটনার সময় ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা রেডিসন ব্লু হোটেলের পাশ দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। অনেকে বাসের জন্য ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

এ সময় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস এলে শিক্ষার্থীরা তাতে ওঠার চেষ্টা করেন। ওই সময় জাবালে নূর পরিবহনের আরেকটি বাস বাম পাশ দিয়ে ঢুকে শিক্ষার্থীদের চাপা দেন। এতে ঘটনাস্থলে দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। খবর পেয়ে প্রতিষ্ঠানের অন্য শিক্ষার্থীরা এসে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং বেশ কয়েকটি বাস ভাঙচুর করেন। পরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।

(জাস্ট নিউজ/একে/২০০৯ঘ.)