খালেদা জিয়া ২০১৪ সালের ভোটে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিলো: মির্জা আলমগীর

খালেদা জিয়া ২০১৪ সালের ভোটে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিলো: মির্জা আলমগীর

ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : একাদশ সংসদ নির্বাচনকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‌‌‌‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রধান নেত্রী, তিন বারের সফল প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ২০১৪ সালে ভোটে না যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা সঠিক ছিল। এবার তা প্রমাণিত হয়েছে।’

সোমবার বিকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে এ প্রতিক্রিয়া জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা আলমগীর বলেন, নির্বাচন ছিল তাদের পূর্ব পরিকল্পিত। নির্বাচনের পর বিভিন্নস্থানে সহিংসতা শুরু করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশন একটি ঘৃণিত কমিশন এবং সিইসি একজন ঘৃণিত ও নিকৃষ্ট ব্যক্তি। তিনি সরকার দলের লোক। তার কাছে আমাদের কোন আবেদন করে লাভ নেই। এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরাতো নির্বাচন বর্জনই করেছি।

মির্জা আলমগীর আরো বলেন, নজিরবিহীনভাবে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে নির্বাচন করেছে সরকার। তাই আমরা এ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছি। আবার নির্বাচন করতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে কখনো এভাবে নজিরবিহীনভাবে নির্বাচন হয়নি।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘কাল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগে থেকেই এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। নির্বাচনের আগেই আসন ধরে ধরে ভৌতিক মামলা হয়েছে। সেই মামলা ধরে ধরে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই মামলায় বিরোধী দলকে আটকানোর জন্য গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে। সারা দেশে সরকার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস শুরু করে। এর মাধ্যমে গোটা দেশে ভীতির পরিবেশ তৈরি করে। এমন নির্বাচন অতীতে আর কখনো হয়নি এ দেশে। এমনকি সারা দেশে টার্গেট করে এজেন্টদের আটক করা হয়েছে। নির্বাচনের আগের দিন সন্ধ্যা থেকে জাল ভোট দিয়ে কারচুপি করা হয়েছে। এর সাথে র্যাব পুলিশ সহায়তা করেছে।’

তিনি বলেন, ‘ভোটের দিন সকালেও কেন্দ্র দখল করেছে। কিছু কেন্দ্রে ১১টা পর্যন্ত ভালো রেখেছে, কিন্তু যখন দেখল ভোটাররা বেরিয়ে আসছে তখনো সেটি দখলে নিয়েছে। এসব কাজে রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলো সহায়তা করেছে। তারা সব সময় বিরোধী দলকে তাড়ানোর কাজে নিয়োজিত ছিল। অনেক জায়গায় তারা আমাদের নেতা-কর্মীদের গুলি করেছে।’

এজেন্টদের বিষয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। এজেন্টদের যে তালিকার কাগজ ছিল সেগুলো ছিঁড়ে ফেলেছে। সিইসি এজেন্টদের বিষয়ে যা বলেছেন তা সঠিক নয়। আমাদের এজেন্টদের না আসতে দিলে আমরা কী করব?’

তিনি আরো বলেন, ‘এ নির্বাচনে আগেই পরিকল্পনা করে রাখা হয়েছে। এ নির্বাচনে ভোট কারচুপির বিষয়টি আগে থেকেই ছিল সুপরিকল্পিত। ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়েছে ভোটের আগের রাতে। এ নির্বাচনে জনগণকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। এ নির্বাচনে ভীতি ছাড়া কিছু ছিল না।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এ নির্বাচনে কোনো বিদেশি পর্যবেক্ষক ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষকদের আসতে দেওয়া হয়নি। আর ইইউ তাদের কোনো পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। যারা এসেছে তারা সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত। সরকার নিজের টাকায় তাদের নিয়ে এসেছে।’

নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে ফখরুল বলেন, আমরা জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছি জুলুম নির্যাতন সত্ত্বেও।

শপথ নেবেন কি না জানতে চাইলে বগুড়া-৬ (সদর) আসন থেকে নির্বাচিত মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা তো এ নির্বাচনের ফলাফলই প্রত্যাখ্যান করছি।’

মির্জা আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২১ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে তাদের মুক্তির দাবি করছি।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা দাবি আদায়ে লিগ্যালি ও আন্দোলনের দুটোই চেষ্টা চালিয়ে যাব। আমাদের আন্দোলনের কর্মসূচি থাকবে। দল ও জোটের সাথে আলোচনা করে সেটি জানিয়ে দেওয়া হবে।’

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১৯৪৮ঘ.)