হাসিনার চায়ের দাওয়াত ঐক্যফ্রন্ট-বাম জোটের প্রত্যাখান

হাসিনার চায়ের দাওয়াত ঐক্যফ্রন্ট-বাম জোটের প্রত্যাখান

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের রেশ এখনো ফুরোয়নি। নির্বাচন নিয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক দুই অঙ্গনেই প্রশ্ন উঠছেে, দাবি উঠেছে স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের। সে দাবিতে অটল থেকেই গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চায়ের দাওয়াতে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। একিসুরে নিজেদের অবস্থানও জানান দিয়েছে গণতান্ত্রিক বামজোট।

গণভবনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও তাদের সম্মানে চা-চক্রের আয়োজন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনের লনে বিকাল তিনটায় এ অনুষ্ঠান শুরু হবে। এতে নির্বাচনে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতৃবৃন্দ এবং বিশিষ্ট নাগরিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রণ পেলেও এ অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছে না ঐক্যফ্রন্ট ও বামজোট। ঐক্যফ্রন্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে।

তবে আমন্ত্রণের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে চিঠিতে। বলা হয়েছে, গণভবনে ২রা ফেব্রুয়ারি শুভেচ্ছা বিনিময় ও চা-চক্রে আমন্ত্রণের জন্য আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) ধন্যবাদ। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সভায় এটি অন্যতম এজেন্ডা হিসেবে আলোচিত হয়েছে এবং কমিটি চা-চক্রে অংশ না নেয়ার বিষয়ে সর্বসম্মতক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঐক্যফ্রন্টের ৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি নিয়ে যান। চা-চক্রে অংশ না নেয়ার কারণ হিসেবে চিঠিতে বলা হয়- ৩০শে ডিসেম্বর নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকার কোনোভাবেই নৈতিক নয়। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষের প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষমতা হরণ করা হয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের হাজার হাজার নেতাকর্মী এখনো কারাগারে। নতুন নতুন মামলায় আরো অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে চা-চক্রে অংশ নেয়া কোনোক্রমেই সম্ভব নয়।

গত ২৬শে জানুয়ারি গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে শুভেচ্ছা বিনিময় ও চা-চক্রের আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চিঠির মাধ্যমে আজ ২রা ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন, বিএনপি মহাসচিব ও ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সব সদস্যের নামে আলাদা আলাদা চিঠির মাধ্যমে এ দাওয়াত দেয়া হয়।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও চা-চক্র অনুষ্ঠানে যাচ্ছে না ৮টি বাম দল নিয়ে গঠিত ‘বাম গণতান্ত্রিক জোট’-এর নেতারা। গতকাল জোটের পক্ষ থেকে এমনটাই জানান বাম জোটের অন্যতম মুখপাত্র ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, গত ৩০শে ডিসেম্বর নির্বাচনের নামে দেশের মানুষের সঙ্গে যেই প্রহসন করা হয়েছে, তারপর এই জনমতহীন সরকারের সঙ্গে চা-পান কেন, কোনো আলোচনায়ই যেতে রাজি নয় বাম জোট। এই অনির্বাচিত সরকারের সঙ্গে তাদের নির্বাচনী উৎসবের চা-চক্রে যোগ দেয়া বাম জোট নৈতিক মনে করে না।

জিএস