৮ বছর পর গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিল আজ

৮ বছর পর গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিল আজ

দীর্ঘ ৮ বছর পর বিশেষ কাউন্সিলে বসতে যাচ্ছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম। আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় মহানগর নাট্যমঞ্চে এ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পুনর্গঠনের মাধ্যমে দলকে চাঙ্গা করা এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সরকারসহ জনগণের সামনে একটি সুস্পষ্ট বক্তব্য তুলে ধরা হবে।

এ ছাড়া নতুন করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলাসহ মোট তিনটি লক্ষ্য নিয়ে এ আয়োজন করা হচ্ছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভবিষ্যৎ, দলীয় নির্দেশ অমান্য করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়া দুই নেতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত, বিএনপির সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ও কাউন্সিলে আলোচনা হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, দলকে পুনর্গঠন করাই এ মুহূর্তে আমাদের প্রধান কাজ। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকে মারা গেছেন, নতুন অনেকে যুক্ত হয়েছেন। তাদের নিয়ে দল পুনর্গঠন করা হবে। এ ছাড়া কাউন্সিল থেকে রাজনৈতিক কর্মসূচি আসবে। সারা দেশে সভা-সমাবেশ, আমাদের দাবি-দাওয়ার প্রতি জনসমর্থন আদায়- এসব বিষয় সামনে রয়েছে।

দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে গণফোরাম দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সঠিক দিকনির্দেশনা নিয়ে হাজির হবে। দল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে গত বছরের শেষদিকে গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছিল গণফোরাম। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় গণফোরামের সাংগঠনিক দুর্বলতার বিষয়গুলো উঠে আসেনি। কিন্তু গত আট বছরে কাউন্সিল না হওয়ায় দলের সাংগঠনিক শক্তি অনেকটাই খর্ব হয়েছে। দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই যেমন মারা গেছেন, তেমনি দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন নতুন অনেকে। বিভাগীয় ও জেলা কমিটিগুলোও একেবারেই সক্রিয় নয় বললেই চলে।

এ পরিস্থিতিতে দলকে পুনর্গঠন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এর আগে গণফোরামের সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ২০১১ সালে। এরপর গত আট বছরে কাউন্সিল না হওয়ায় দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম একেবারেই স্থবির হয়ে পড়ে। কেন্দ্রসহ বিভাগীয় ও জেলা ইউনিটগুলো কর্মসূচির মধ্যেও নেই। ফলে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত দলকে পুনর্গঠন করে চাঙ্গা করে তোলাই গণফোরামের এই কাউন্সিলের প্রধান লক্ষ্য। তবে দল পুনর্গঠনই শুধু নয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করে পুনর্নির্বাচনের দাবি রয়েছে গণফোরামের।

কিন্তু সেই দাবি আদায় করতে হলে সারা দেশে দাবির পক্ষে জনসমর্থন গড়ে তুলতে হবে এবং সেই জনমত নিয়ে আন্দোলনে নামতে হবে। বিশেষ কাউন্সিলে এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতারা। কাউন্সিল থেকে এ বিষয়ে সারা দেশে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণারও কথা রয়েছে। এর বাইরে দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে চায় গণফোরাম।

দেশের মানুষের সামনে রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা তুলে ধরতে চায় দলটি। শুধু তাই নয়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকেও বিশেষ বার্তা দিতে চায় এ দল। আর সেই লক্ষ্যে কাউন্সিল থেকে দলের একটি লিখিত বক্তব্য প্রচারের কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

জানতে চাইলে গণফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জগলুল আফ্রিদ বলেন, ২০১১ সালের পর থেকে দলের কোনো কাউন্সিল হয়নি। দলকে পুনর্গঠন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

গত আট বছরে অনেকেই আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, আরো অনেকে যুক্ত হবেন। তাদের কার ভূমিকা কী হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন আছে। সারা দেশের সবার কাছ থেকে মতামত নিতে হবে এ জন্য।

তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দলের কাউন্সিলে রাজনৈতিক বক্তব্যও থাকবে। আমাদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে বার্তা দেয়া হবে, এমনটিই পরিকল্পনা রয়েছে।

এমআই