মির্জা আলমগীরের আসনে আজ ইভিএমে ভোটগ্রহণ

মির্জা আলমগীরের আসনে আজ ইভিএমে ভোটগ্রহণ

আজ বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ। আগেই ভোটগ্রহণের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রশাসন। ভোটাররা প্রথমবারের মত ইভিএমে ভোট দিচ্ছেন। আজ সাধারণ ছুটি ঘোষণার পরও যানবাহন চলাচল শিথিল করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল রবিবার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম থেকে কেন্দ্রগুলোতে ইভিএম ও অন্যান্য সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। সাত প্রার্থীর মধ্যে ধানের শীষ, নৌকা ও লাঙ্গলের মধ্যে লড়াই হবে।

প্রার্থীরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এসএমটি জামান নিকেতা (নৌকা), জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ (ধানের শীষ), জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ওমর (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের জেলা আহ্বায়ক ড. মনসুর রহমান (ডাব), বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মুফতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম (হারিকেন), স্বতন্ত্র প্রার্থী মালয়েশিয়া যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ মন্ডল (আপেল) ও সৈয়দ কবির আহম্মেদ মিঠু (ট্রাক)।

তবে গত ২০ জুন সংবাদ সম্মেলনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাধ্যমে সৈয়দ কবির আহম্মেদ মিঠু (ট্রাক) নির্বাচন থেকে সরে গেছেন। তবে ইভিএমে তার নাম ও প্রতীক থাকবে।

বগুড়া উপনির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মাহবুব আলম শাহ জানান, বগুড়া পৌরসভার ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টি ও সদর উপজেলার ১১ ইউনিয়ন নিয়ে বগুড়া-৬ (সদর) আসন। মোট ভোটার ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৪৫৮ জন। তারা ২৪ জুন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ১৪১ কেন্দ্রে ৯৬৫ বুথে ইভিএমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

রবিবার শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামের ইনডোর প্রাকটিস কেন্দ্র থেকে সব কেন্দ্রে ইভিএম ও অন্যান্য সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

বগুড়া পুলিশের বিশেষ শাখার সূত্র জানায়, ১৪১ কেন্দ্রের মধ্যে ১১১টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) ও ৩০টি সাধারণ। নির্বাচনে যে কোনো গোলযোগ ও সহিংসতা এড়াতে তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন বাহিনীর প্রায় সাড়ে ৩ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে ৫ পুলিশ ও সাধারণ কেন্দ্রে একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে ৪ পুলিশ থাকবে। এছাড়া ১৫ প্লাটুন বিজিবি সদস্য, প্রতি কেন্দ্রে ১২ জন আনসার সদস্য, র‌্যাবের ৮ সদস্যের ১৪টি টিম দায়িত্ব পালন করবে। ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে থাকবে ২৬টি ভ্রাম্যমান টিম।

এদিকে প্রতীক পাবার পর থেকে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকরা ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন। ২২ জুন সকাল ৯টায় প্রচারণা শেষ হলেও গোপনে ভোট চাওয়ার কাজ চলছে।

প্রচারণায় গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ ও তার সমর্থকরা বলেছেন, ধানের শীষে ভোট দিলে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জেল থেকে মুক্তি পাবেন এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান দেশে ফিরে আসতে পারবেন।

তিনি আরো বলেন, সরকার এখানে ইভিএম দিয়ে সারা দেশে এটাকে জায়েজ করার চেষ্টা করছে। তাই তিনি ভোটে নির্বাচিত হলে মেনে নেবেন আর পরাজিত হলে সে ব্যাপারে জনগণ সিদ্ধান্ত নিবেন।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী এসএমটি জামান নিকেতা ও তার সমর্থকরা বলেছেন, বিএনপি প্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনে এমপি থাকাকালে তার পরিবহণ ব্যবসার স্বার্থে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ ও বগুড়া বিমানবন্দর প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে দেননি। তাই তিনি (নিকেতা) নির্বাচিত হলে এ দুটি প্রকল্প ছাড়াও পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং চলমান প্রকল্পগুলোর গতি ত্বরান্বিত করবেন।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুরুল ইসলাম ওমর জানান, তিনি ৫ বছর মহাজোটের এমপি থাকাকালে সাধ্যমত বগুড়ার উন্নয়নে কাজ করেছেন। তিনি নির্বাচিত হলে এসব কাজ শেষ ছাড়াও আরো উন্নয়ন করবেন।

গত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনে বগুড়া-৬ (সদর) আসনে মহাজোটের পক্ষে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম ওমরকে। তিনি বিএনপি প্রার্থী দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হন।

৩০ ডিসেম্বরের ওই নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রাপ্ত ভোট ২ লাখ ৭ হাজার এবং মহাজোট প্রার্থী নূরুল ইসলাম ওমর পায় ৪০ হাজার ভোট। পরে এই আসনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শপথ না নেয়ায় শূন্য ঘোষণা করা হয়।

এমআই