পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ

বিএনপির ৬৯ নেতাকর্মী আটক

বিএনপির ৬৯ নেতাকর্মী আটক

ঢাকা, ৩১ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকায় মঙ্গলবার বিকালে বিএনপির দুই কর্মীকে আটক করে পুলিশ। তোলা হয় প্রিজনভ্যানে। তখন সেখানে সহস্রাধিক বিএনপি নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। তারা আটক দু’কর্মীকে প্রিজনভ্যান থেকে ছিনিয়ে নেয়। এর এক পর্যায়ে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহর ওই এলাকা অতিক্রম করার সময় এই ঘটনা ঘটে।

এতে কয়েক পুলিশসহ বিএনপির কয়েককর্মীও আহত হন। বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহর ওই এলাকা অতিক্রমের পর পুলিশ বিএনপির ৬৯ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। তাদেরকে রমনা ও শাহবাগ থানায় নেয়া হয়েছে। ঘটনার সময় ক্ষুব্ধ কর্মীরা এক পুলিশ সদস্যের বন্দুক কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে। ভাঙচুর করে পুলিশের একটি প্রিজনভ্যান। বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ি বহর ওই এলাকা ত্যাগ করলে আট-দশ মিনিটের ব্যবধানে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা জোনের উপ- কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার বলেন, বিএনপির ৬৯ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। রমনা ও শাহবাগ থানা পুলিশ তাদের আটক করে। এ ঘটনায় উভয় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরের পর হাইকোর্ট ও প্রেস ক্লাব এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকে। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ওই পথ দিয়ে আদালতে আসা-যাওয়া উপলক্ষে তাদের ওই জমায়েত বেশ কয়েকমাস ধরে চলে আসছিল। মামলার রায়ের দিন ঘনিয়ে আসায় কর্মী সমাগমও বাড়ছিল। গতকাল পুলিশ সেখান থেকে সোহাগ মজুমদার এবং ওবায়দুল হক মিলন নামে দুই কর্মীকে আটক করে গাড়িতে তোলে। তারা এক পর্যায়ে সেখানে জমায়েত হওয়া নেতাকর্মীদের ইশারা দিয়ে ডাকে। এরপর ওই ভ্যান ঘিরে ফেলে কর্মীরা। তাদেরকে বের করতে চেষ্টা করে। বাধা দিতে এগিয়ে যান এক পুলিশ সদস্য। তাকে ঘিরে ফেলে কর্মীরা। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যান অপর এক পুলিশ সদস্য। তাকেও ঘিরে ফেলে তারা। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলে পড়ে। ক্ষুব্ধ কর্মীরা আছড়িয়ে ভেঙে ফেলে একটি বন্দুক। তখন উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় প্রিজনভ্যানেও ভাঙচুর চালানো হয়। ভেঙে গেছে গাড়ির কয়েকটি কাঁচ। এক পর্যায়ে দলের কয়েক নেতা এসে তাদের নিবৃত্ত করেন। সে সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়ি কর্মী পরিবেষ্টিত হয়ে ওই এলাকা ত্যাগ করে। গাড়ির পেছন পেছন নেতাকর্মীরাও সামনের দিকে এগিয়ে যায়। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।

এদিকে, বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহর সে স্থান ত্যাগের পর পুলিশ আবার সেখান থেকে বিএনপির অন্তত ২০ নেতাকর্মীকে আটক করে। তাদের কয়েকজনের নাম বাবু, জাভেদ ও হুমায়ুন বলে জানা গেছে। তবে কী কারণে তাদের আটক করা হয়েছে, তা জানানো হয়নি।

রমনা জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার সাংবাদিকদের জানান, বেগম খালেদা জিয়া কোর্ট থেকে ফেরার পথে আমরা যথেষ্ট ধৈর্যশীল ছিলাম। আমাদের একটি প্রিজনভ্যান ভাঙচুর হয়েছে। আটক থাকা দুইকর্মীকে তারা নিয়ে গেছে। তারা কোনো মামলার আসামি ছিল কিনা- তা এই মুহূর্তে বলতে পারবো না। আমাদের দুজন সদস্যও আহত হয়েছেন।

শাহবাগ থানা পুলিশের এক সদস্য বলেন, অন্তত ২০ জনকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। তাদের কার কী ভূমিকা ছিল তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এতে জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদেরকে আটক বা গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

(জাস্ট নিউজ/ওটি/১০৩৩ঘ.)