মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভেঙ্গে খান খান করেছে সরকার: মির্জা আলমগীর

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভেঙ্গে খান খান করেছে সরকার: মির্জা আলমগীর

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভেঙ্গে খান খান করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার দুপুরে এক যৌথ সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব বলেন তিনি।

মির্জা আলমগীর বলেন, আমরা রণাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জন করেছিলাম বিজয় দিবস। সেই দিনটিকে যথাযথভাবে পালন করছি শুরু হতেই। কিন্তু আজকে একটি দল নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের মালিকানা মনে করে। স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও আমরা সত্যিকারের স্বাধীন বাংলাদেশ পাইনি। যারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দাবি করে তাদের দ্বারা দেশের গণতন্ত্র বার বার নিহত হয়েছে।

মির্জা আলমগীর আরো বলেন, আওয়ামী লীগ অতীতে বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে দেশের চারটি বাদে সকল গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছিল। আজকেও তারা ভিন্ন লেবাসে বাকশাল কায়েম করেছে। আজকে গণতন্ত্রের নেত্রী যিনি দীর্ঘ নয় বছর সংগ্রাম করেছেন। আজো সংগ্রাম করছেন সেই নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় তাকে কারাগারে বন্দী রেখেছে সরকার। ক্ষমতাসীনরা সংবিধান সংশোধন করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে সমস্ত আয়োজন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুধু দল ও ব্যাক্তিকে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য স্বাধীনতার স্বপ্ন ভেংগে খান খান করে দিয়েছে। মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ক্ষমতাসীনরা ভয়ের পরিস্থিতি তৈরি করে দেশ শাসন করছে। নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আবারো আগের অবস্থা ফিরে এসেছে। পুলিশ নেতা-কর্মীদের হয়রানি করছে।

বর্তমানে দখলদারিত্ব মন্ত্রিসভার সদস্যরা বেগম খালেদা জিয়ার জামিন প্রসঙ্গে উল্টাপাল্টা কথা বলছেন। অথচ ২০০৬ সালের নভেম্বরে আদালতে আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা আন্দোলন করে ভাংচুর করেছে। আমাদের নেতা শাহজাহান ওমরের গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিল। প্রধান বিচারপতির এজলাস লন্ডভন্ড হয়েছিল। আদালত শুনানি স্থগিত করেছিল। আজকে এসব ইতিহাস মিডিয়া লিখতে ও বলতে পারে না। আসলে দেশে আইনের শাসন নেই।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে জঘন্য নাটক করছে সরকার। আমি বলবে- দয়া করে নাটক বাদ দিয়ে দেশনেত্রীকে জামিন নিয়ে বেঁচে থাকার ব্যবস্থা করুন। না হলে দেশের মানুষ কখনই আপনাদের ক্ষমা করবে না। দেয়ালের লিখনের ভাষা পড়ুন। মানুষের মুখের ভাষা বুঝতে চেষ্টা করুন।

মির্জা আলমগীর বলেন, আজকে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। প্রতেকটি সূচক কমেছে। গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংস। রফতানি কমেছে। দেশকে খালি কলসির দিকে নিয়ে গেছে সরকার। এখন দুর্বৃত্তদের কবলে দেশ। রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট করে দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে। কানাডায় একটি পাড়া তৈরি হয়েছে যার নাম বেগম পাড়া। আসলে তারা জানে যে তাদের পতন অনিবার্য। এজন্যই টাকা পাচার করেছে। তবে মানুষ কিন্তু জেগে উঠেছে। আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়েই তারা বিজয় অর্জন করবে।

তিনি আরো বলেন, বিজয়ের মাস উদযাপন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মাসের চেতনায় দানব সরকারকে হটিয়ে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও পতাকা রক্ষা করতে হবে। আসুন আমরা সেই শপথ নিই।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই যৌথ সভা হয়। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, মীর সরফত আলী সপু, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, আব্দুল আউয়াল খান, কাজী আবুল বাশার, আকম মোজাম্মেল হক, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মজিবুর রহমান, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, যুবদলের মামুন হাসান, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, জাসাসের হেলাল খানসহ বিভিন্ন অংগ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।