দাঁড়াইয়া মাঠে আসেন, হেফাজত আমিরকে ছাত্রলীগ সভাপতির হুমকি

দাঁড়াইয়া মাঠে আসেন, হেফাজত আমিরকে ছাত্রলীগ সভাপতির হুমকি

ভাস্কর্য ইস্যুতে হেফাজত আমির আল্লামা বাবুনগরীকে হুমকি দিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়।

তিনি বলেন, বাবুনগরী আপনি বড় বড় কথা বলেন। পেট তো অনেক বড় করেছেন বইসা থেকে। দাঁড়াইয়া মাঠে আসেন, মাদ্রাসার সামনে বসে বড় বড় কথা বইলেন না। আপনারা মুরুব্বি, আপনাদের প্রতি শ্রদ্ধা আছে কিন্তু আপনারা শ্রদ্ধার জায়গায় আঘাত করেছেন। জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাঙার পেছনে আপনাদেরই প্রত্যক্ষ মদদ আছে।

রোববার দুপুরে 'কুষ্টিয়ায় রাতের অন্ধকারে জাতির পিতার নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে' ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

ভাস্কর্য নিয়ে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হকের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি জয় বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের প্রত্যেকটি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থার সবার প্রতি অনুরোধ জানাবো আপনারা এখনই তাদের প্রত্যেকটি কর্মকাণ্ডকে খেয়াল করুন। জঙ্গিবাদকে উস্কে দিচ্ছে মামুনুল হক।

মামুনুল হকের উদ্দেশে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশকে যিনি সৃষ্টি করেছেন সেই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে তোরা কথা বলোস। মামুনুল হক তুই ব্যাটা ভাস্কর্য আর মূর্তির মধ্যের পার্থক্যই বুঝোছ না। তোকে তুই করে বলব কারণ তুই ধৈর্যের সীমা হারিয়ে ফেলেছিস। তোরা যারা ধর্মকে পুঁজি করে দেশে অরাজকতা তৈরি করছিস তোদেরকে বলি শোন- মূর্তি তৈরি করা হয় মাটি দিয়ে। পূজার পর এটি পানিতে বিসর্জন করা হয়। আর ভাস্কর্য তৈরি করা হয় পাথর দিয়ে স্থায়ীভাবে। এটা একটি দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণ করে।

সমাবেশে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে ও সাধারাণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন, ঢাকা উত্তর মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান হৃদয়, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. জুবায়ের আহমেদসহ বিভিন্ন শাখার নেতা-কর্মীরা। সমাবেশের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয় যা ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

ওয়াজ মাহফিলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে সংগঠনের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, প্রত্যেকটা পাড়ায় ওয়াজ মাহফিলে পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা যদি বাংলাদেশের মানচিত্রের মালিক বঙ্গবন্ধু, দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে নিয়ে কোনো কথা বলে তাদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে। আমি একটা কথা স্পষ্ট বলতে চাই, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু আছে। ভাস্কর্যের অবমাননা করে বঙ্গবন্ধুকে প্রতিহত করা যাবে না।

লেখক ভট্টাচার্য মৌলবাদী অপশক্তিকে লক্ষ্য করে বলেন, আপনাদের বারবার সাবধান করা হয়েছে কিন্তু কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার মাধ্যমে আপনারা আপনাদের সীমালঙ্ঘন করেছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অনেক ধৈর্য ধরেছে, অনেক প্রতিরোধ করেছে, অনেক প্রতিবাদ করেছে এখন আর ছাত্রলীগ প্রতিবাদে বিশ্বাস করবে না। এখন আপনাদের শক্ত হাতে প্রতিহত করা হবে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের ৫৫ হাজার বর্গমাইলের প্রতিটি জায়গায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মী রয়েছে। আপনাদের আশাপাশে যারাই এই ধর্ম ব্যবসায়ী, ভণ্ড হুজুররা ওয়াজ মাহাফিলের মাধ্যমে ধর্মের সঙ্গে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব তৈরি করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।

লেখক ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলবেন না। যদি কেউ বলেন, জাতির জনকের অবমাননা করেন, তাহলে সেই দেহ নিয়ে বাড়িতে ফিরতে পারবেন না। তাদের ঠিকানা হবে কারাগারে বা ফাঁসির কাষ্ঠে।