বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক হবে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি

বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক হবে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি

বর্তমান সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করার লক্ষ্যে রাজপথের আন্দোলন বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে একমত হয়েছে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।

আজ বুধবার দুপুরে প্রায় দুই ঘণ্টার সংলাপ শেষে যৌথ ব্রিফিংয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এ কথা জানান। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যালয়ে ওই সংলাপ হয়।

যৌথ ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘অত্যন্ত আনন্দের কথা যে আমরা উভয় দল কতগুলো মৌলিক বিষয়ে একমত হয়েছি। আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে যে এখন আমরা যৌথভাবেই আন্দোলন শুরু করব এবং নিজ নিজ জায়গা থেকে আন্দোলন শুরু করব। আন্দোলন যুগপৎ হবে এবং এর মধ্য দিয়েই ধারা নির্ধারিত হবে যে শেষ পর্যন্ত সেটা কীভাবে রূপ নিচ্ছে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করব, এ ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি। পদত্যাগে বাধ্য করার পর এ সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। এ ব্যাপারেও আমরা একমত হয়েছি। সংসদ বিলুপ্ত করার পর নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে জনগণের অংশগ্রহণে একটা নতুন নির্বাচনের ব্যাপারেও আমরা একমত হয়েছি।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমরা রাজনৈতিক দলগুলো একজোট হয়ে কাজ করলে অবশ্যই এই দুঃশাসনকে পরাজিত করে জনগণের বিজয় অর্জন করতে সক্ষম হব।’

এদিকে বিএনপির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সংলাপে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার কথা জানান বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, ‘এই দুঃশাসন থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য মানুষ বিরোধী দলগুলোর একটা সমন্বিত যুগপৎ ধারার কার্যকর মাঠের ঐক্য দেখতে চায়।’

সাইফুল হক বলেন, ‘আমরা একমত হয়েছি, বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতি যে পর্যায়ে, বিশেষ করে দুটো জাতীয় নির্বাচনের অভিজ্ঞতার পর কোনো দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনের আগেই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং একটি নিরপেক্ষ তদারকি সরকার গঠন করতে হবে।’

সামগ্রিকভাবে পুরো সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থায় একটা গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানান সাইফুল হক। এ লক্ষ্যে দলের ৩১ দফা প্রস্তাবের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গতানুগতিকভাবে শুধু একটা বিশেষ সরকারকে পদত্যাগ করিয়ে আরেকটি গতানুগতিক সরকার গঠন নয়। আমরা সত্যি সত্যি বাংলাদেশে একটা আধুনিক, গণতান্ত্রিক, মানবিক দায়বদ্ধ রাষ্ট্র-সরকার-সমাজের দিকে অভিযাত্রা শুরু করতে চাই।’

সাইফুল হক বলেন, ‘পুরো রাষ্ট্র ও সরকারব্যবস্থা, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাষ্ট্র যেভাবে নাগরিকদের ওপর একটা সহিংস ভূমিকায় আবির্ভূত হয়, রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোকে যেভাবে দলীয় বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা হয়—এই জায়গাগুলোর ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন।’

বিরোধী দলগুলো যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার পাশে নিজ নিজ জায়গা থেকে দাঁড়াতে ও আন্দোলনে শরিক হতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান বাম ঘরানার দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এই নেতা।

রাজপথে বৃহত্তর ঐক্য গড়ার লক্ষ্যে বিএনপি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করছে। ইতিমধ্যে নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে সংলাপ করেছে দলটি।

আজকের সংলাপে বিএনপির পক্ষে মির্জা ফখরুল ইসলাম ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় নেতা জহিরউদ্দিন স্বপন উপস্থিত ছিলেন। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষে দলের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নি শিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান, আনসার আলীসহ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা অংশ নেন।