প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে দৃশ্যমান কোনো অর্জন নেই: মির্জা আলমগীর

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে দৃশ্যমান কোনো অর্জন নেই:  মির্জা আলমগীর

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে ১৫৩ কিউসেক পানি ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অর্জন নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী চার দিনের ভারত সফরে বাংলাদেশের অর্জন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্জন যেটা দেখতে পাচ্ছি, কুশিয়ারা নদীর (সিলেট) ১৫৩ কিউসেক পানি। এ ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অর্জন দেখতে পাইনি। বরং যেটা দেখতে পাচ্ছি ৫০০ মিলিয়ন ডলারের একটা প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়েছে, ভারতের কাছ থেকে যানবাহন কেনার জন্য।

বলা হচ্ছে, সীমান্ত হত্যা জিরোতে আনা হবে। যেদিনই এ কথা বলা হয়েছে, সেদিনই দিনাজপুর সীমান্তে একজনকে হত্যা করা হয়েছে এবং দুইজন নিখোঁজ হয়েছে। এই হচ্ছে প্রাপ্তি, দৃশ্যমান প্রাপ্তি এগুলোই দেখি। আর দেখছি, অত্যন্ত সুন্দর সুন্দর কথা বলা হচ্ছে, তাদের ভালোবাসা, প্রেম, সেই কথাগুলোই খুব জোরে জোরে বলা হচ্ছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। নিশ্চয়ই মনে আছে, এই সফরের আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ভারতীয় নেতাদের কাছে অনুরোধ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে যেকোনো উপায়ে টিকিয়ে রাখার জন্য। আমরা সব সময় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমরা বিশ্বাস করি, যেসব দেশ গণতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক বিশ্ব- তারা সব সময় সারা বিশ্বে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখবে।

জনগণের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে তারা তাদের ভূমিকা অক্ষুণ্ণ রাখবে। ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ, গণতান্ত্রিক দেশ। আমরা বিশ্বাস করি, ভারত তার গণতান্ত্রিক যে চরিত্র, সেই চরিত্রকে অক্ষুণ্ণ রাখবে।

বিএনপির চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। ঠিক সেই আগের মতো যেটাকে আমরা বলেছিলাম গায়েবি মামলা, সেই গায়েবি মামলা দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমাদের তিনজন নেতা ভোলায় ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলম, স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আবদুর রহিম এবং নারায়ণগঞ্জে যুবদলের শাওন নিহত হয়েছেন।

গত ৩রা সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের হামলায় গুরুতর আহত ছাত্রদল নেতা সাব্বির হোসেন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। তার ফুসফুস, লিভার ও কিডনিতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। সে রক্ত বমি করছে। তার মা অসহায় অবস্থায় তাকিয়ে আছেন। ডাক্তার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন তার জীবন রক্ষা করার জন্য। এটা তো মাত্র একটি ঘটনা বললাম। সারা দেশে এ রকম অসংখ্য ঘটনা আছে, কারো চোখ চলে গেছে, কারো মাথা ফাঁক হয়ে গেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে আবার আওয়ামী লীগ সরকার সন্ত্রাসের রাজত্ব শুরু করেছে। সন্ত্রাস দিয়ে কখনো টিকে থাকা যায় না। তারা, বিশেষ করে আইনমন্ত্রী ও সেতুমন্ত্রী কথায় কথায় বলেন, আমরা তো মিছিল-মিটিংয়ে বাধা দেব না। আমি বলতে চাই, বিএনপি সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে না, সন্ত্রাস করেও না। এখন পর্যন্ত কোনো গণমাধ্যমে আসেনি বিএনপি কোথাও সন্ত্রাস করেছে। সন্ত্রাসের চিত্র যা এসেছে তা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের। বিশেষ করে ছাত্রলীগ, যুবলীগের সন্ত্রাসীরা, তারা চড়াও হয়েছে গণতন্ত্রকামী মানুষের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জনগণের শক্তি দিয়ে এদের পরাজিত করব।