সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারসহ ১০ দফা দাবি বিএনপির

সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারসহ ১০ দফা দাবি বিএনপির

জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্গঠনসহ দশ দফা দাবি উত্থাপন করেছে বিএনপি। শনিবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে দলটির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ ১০ দফা ঘোষণা করেন। এর আগে সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা।

এসব দাবির মধ্যে রয়েছে:

  • বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করে ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগ।
  • ১৯৯৬ সালের সংবিধান সংশোধনের আলোকে নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন।
  • বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে গ্রহণযোগ্য স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠন এবং লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড গঠনে আরপিও সংশোধন করা। সেই সঙ্গে ইভিএম পদ্ধতি বাতিল, পেপার ভোট নিশ্চিত করা ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার বাতিল।
  • খালেদা জিয়াসহ সব বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী, সাংবাদিক ও আলেমদের সাজা বাতিল।সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও রাজনৈতিক কারাবন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি এবং দেশে সভা সমাবেশ ও মত প্রকাশে কোন বাধা সৃষ্টি না করা। সব দলকে স্বাধীনভাবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালনে প্রশাসন ও সরকারি দলের বাধা সৃষ্টি না করা। স্বৈরাচারি কায়দায় বিরোধী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করতে নতুন কোন মামলা না করা ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার না করা।
  • ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ সব কালাকানুন বাতিল করা।
  • বিদ্যুৎ, জ্বালানি, গ্যাস ও পানিসহ জনসেবা খাতের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করা।
  • নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা ও বাজার সিন্ডিকেটমুক্ত করা।
  • গত ১৫ বছর ধরে বিদেশে পডাচার করা অর্থ, ব্যাংক, আর্থিক খাত ও শেয়ারবাজার সহ সব ক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্নীতি চিহ্নিত করতে কমিশন গঠন ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
  • গত ১৫ বছরে গুমের শিকার সব নাগরিককে উদ্ধার ও বিচারবর্হিভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের দ্রুত বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করা। সেই সঙ্গে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, উপসনালয় ও সম্পত্তি দখলের জন্য বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করা।
  • আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও বিচারবিভাগের ওপর সরকারি হস্তক্ষেপ দূর করে স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

দেশে সভা, সমাবেশ ও মতপ্রকাশে কোনো বাধা সৃষ্টি না করা। সব দলকে স্বাধীনভাবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে প্রশাসন ও সরকারি দলের কোনো ধরনের হস্তক্ষপ বা বাধা সৃষ্টি না করা। স্বৈরাচারি কায়দায় বিরোধী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে নতুন কোনো মামলা ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার না করা; ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪’সহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী আইন বাতিল করা; বিদ্যুৎ, জ্বালানি, গ্যাস ও পানিসহ জনসেবা খাতের মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল; নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারকে সিন্ডিকেট মুক্ত করা; গত ১৫ বছর ধরে বিদেশে অর্থপাচার, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত ও শেয়ার বাজারসহ রাষ্ট্রীয় সব ক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্নীতি চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠন।

দুর্নীতি চিহ্নিত করে অতিদ্রুত যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ; গত ১৫ বছরে গুমের শিকার সব নাগরিককে উদ্ধার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ভাঙচুর এবং সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ; আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে সরকারি হস্তক্ষপ পরিহার করে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়া।