সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে: মির্জা ফখরুল

সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে: মির্জা ফখরুল

আগামী নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশটা কাউকে ইজারা দেইনি। আপনাকে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে। সময় থাকতে না ছাড়লে জনগণের প্রবল আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হবেন। কতদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন, সেটা এখন থেকই গুনতে হবে।

তিনি বলেন, আবার তারা (সরকার) বলতে শুরু করেছে এবং জোরেশোরে চিৎকার করে বলেছে যে, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে এবং সেটা সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ হবে। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা, তাদেরকে বোকা বানানোর চেষ্টা করা। তাদের অধীনে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি এবং হবে না।

শুক্রবার রাজধানীর পুরান পল্টনের কালভার্ট রোডে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আয়োজিত সংহতি সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনা সবসময় সংবিধান অনুযায়ী অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তার এ কথা যে পুরোটাই মিথ্যা তার বড় প্রমাণ ২০১৮ সালের নির্বাচন। ওই নির্বাচনের আগে তিনি দেশবাসীর সামনে বলেছিলেন, তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে। অথচ আগের দিন রাতে ভোট হয়ে গেল। আর ২০১৪ সালে কেমন ভোট হয়েছে তাও দেখেছি। 

তিনি বলেন, আবারও শেখ হাসিনা একটি ভোটারবিহীন পাতানো নির্বাচন করতে চায়। সে লক্ষ্যে এগোচ্ছেন তিনি। কিন্তু এবার দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। তারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মানুষ সব ভয়কে জয় করতে এখন রাজপথমুখী। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এবার শুধু দেশের জনগণ নয়, গোটা পশ্চিমাবিশ্ব এখন শেখ হাসিনার পাতানো নির্বাচনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বলছে, এখানে নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। 

দেশের সর্বক্ষেত্রে অরাজকতা চলছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিমাসে রিজার্ভ কমছে। গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি কমছে। ঠিকমতো শ্রমিকদের ব্যবসায়ীরা বেতন দিতে পারছে না। মানুষ ঠিকমতো খেতে পারে না। কিন্তু অত্যাচারের ভয়ে কেউ কথা বলে না। প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিএনপির ৬০০ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। ৪৫ লাখ নেতাকর্মীর নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, অনেক হয়েছে এবার যাও’ এমন স্লোগান তরুণদের কণ্ঠে জোরালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে হবে। শেখ হাসিনা পদত্যাগ না করলে তাকে জনগণের প্রবল আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে। তাহলেই একটি নিরপেক্ষ ভোট হবে। সেই ভোটে অংশ নেবে বিএনপি। এদের অধীনে কোনো ভোটে যাবে না বিএনপি ও সমমনারা। 

খালেদা জিয়াকে হত্যার অপচেষ্টা করছে এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে তারা এমন কথা বলছে, যা মুখে আনা যায় না। অশালীন অরুচিকর কথা। এটা পরিষ্কার- এই সরকার তার মৃত্যু চান, তাকে হত্যা করতে চান। মানুষের জীবন বাঁচানোর মালিক তো আল্লাহ। 

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের সঞ্চালনায় সংহতি সমাবেশে কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবব্রাহিম, গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।