অঘোষিত যুদ্ধের মাধ্যমে অবৈধ সরকারকে প্রত্যাখান করেছে জনগণ

অঘোষিত যুদ্ধের মাধ্যমে অবৈধ সরকারকে প্রত্যাখান করেছে জনগণ

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সংগ্রামী আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে সিংহভাগ মানুষ ভোট কেন্দ্রে যায়নি। অবৈধ আওয়ামী সরকারকে বাংলাদেশের জনগণ অঘোষিত যুদ্ধের মাধ্যমে প্রত্যাখ্যান করেছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন নিয়ে মিথ্যাচার বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে। ছাত্রদের মুমিনের চরিত্র অর্জন করতে হবে। মুমিন হতে পারলে বিজয় আসবেই।

আজ বুধবার সকালে রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত সংগঠনের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পীর সাহেব বলেন, বর্তমান সরকারের প্রতি মানুষের ঘৃণা দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে যা বিস্ফোরণ হলে অবৈধ সরকারের নির্মম পতন হবে। পীর সাহেব চরমোনাই দেশের জনগণ ও সচেতন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্রম নিয়ে চক্রান্ত সম্পর্কে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জেনারেল ইউসুফ আহমাদ মানসুরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। আরো বক্তব্য রাখেন, আলহাজ মুহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম, কে এম আতিকুর রহমান, মাওলানা নেছার আহমদ, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা লোকমান জাফরী।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, দেশের স্বাধীনতা থাকবে কি থাকবে না এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এই দেশটাকে ভারতে করদ রাজ্য বানাবার ষড়যন্ত্র চলছে। আদর্শ রাষ্ট্র গড়তে আদর্শ মানুষ প্রয়োজন। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের প্রতিটি কর্মীদের নৈতিকতা, যোগ্যতা, দক্ষতা ও আদর্শের দিক থেকে উত্তম মানে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। দ্বীন বিজয়ের সংগ্রামে ত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। ইসলামী তাহজিব তমাদ্দুন রক্ষায় ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, ইসলামী চেতনা এই জাতির শিকরে প্রোথিত আছে। ইনশাআল্লাহর চেতনা নিয়ে এই দেশকে স্বাধীন করা হয়েছে। দেশের ভূ-খন্ড নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। বৃটিশরা ২শ’বছর শাসন করে এই উপমহাদেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছে কিন্তু বর্তমান অবৈধ সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে। মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, দেশীয় বোধ বিশ্বাস ও সংস্কৃতি উঠিয়ে অপসংস্কৃতির প্রসার ঘটিয়ে ইসলামকে অপসারণের পাঁয়তারা করছে। সকল সচেতন ও দেশপ্রেমিক মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পরতে হবে। ভিনদেশী চক্রান্ত হতে প্রিয় ভূখ-কে রক্ষা করতে হবে। মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, নাস্তিক বানানোর জন্য এদেশ স্বাধীন হয়নি, এপার বাংলা ওপার বাংলার জন্য দেশ স্বাধীন হয়নি;সামান্য স্বার্থের জন্য এই ভূ-খন্ডকে ধ্বংস করবেন না। ইসলামী ঐতিহ্য সংস্কৃতি রক্ষায় প্রয়োজনে রক্ত দিতে হবে।

মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেন, প্রশ্ন আসছে আমরা স্বাধীন না পরাধীন। শরীরের রক্ত বরাদ্দ করে দেশ ইসলাম ও স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে হবে। অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, দেশের রন্দ্রে রন্দ্রে চুরি। ক্ষমতাসীনরা চোরের খনি থেকে জন্ম নিয়েছে। দেশকে করদ রাজ্যে পরিণত করতে চক্রান্ত চলছে। যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, গণবিচ্ছিন্ন সরকার সাংবিধানিকভাবে অবৈধ সরকার। রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে ফেলেছে এই সরকার। ভরা মৌসুমে চাল ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দুর্ভিক্ষের বার্তা দিচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের অবাধ লুটপাট দেশকে আজ চরম সঙ্কটের মুখোমুখি করে মায়ানমারের মতো গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশবিরোধী অবৈধ সরকারকে উৎখাত করার আন্দোলন শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।

কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ সভাপতির বক্তব্যে বলেন, আমাদের সমাজ দেশের জনগণ ইতিহাসের সবচেয়ে অস্থির সময় পার করছে। ট্রান্সজেন্ডার এর মত ঈমান ও সমাজবিধ্বংসী এজেন্ডা এবং দেশীয় বোধ বিশ্বাস সংস্কৃতিকে উপেক্ষা করে প্রণীত শিক্ষা কারিকুলাম'২১ জাতি হিসেবে আমাদের জন্য উদ্বেগ ও হতাশার। চরম অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে এগোচ্ছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষার্থীরা। এভাবে একটি সমাজ ও রাষ্ট্র চলতে পারে না। পীর সাহেব চরমোনাই নূরুল বশর আজিজীকে কেন্দ্রীয় সভাপতি, ইউসুফ আহমাদ মানসুরকে সহ সভাপতি এবং মুনতাছির আহমাদকে কেক্রেটারি জেনারেল করে ইসলামী ছাত্র আন্দেলনের নতুন কমিটি ঘোষণা করেন।