আ’লীগ সরকারের পতন ছাড়া কোনো উপায় দেখছে না বিএনপি

আ’লীগ সরকারের পতন ছাড়া কোনো উপায় দেখছে না বিএনপি

ঢাকা, ২৮ জুন (জাস্ট নিউজ) : চলমান রাজনৈতিক অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ছাড়া কোনো উপায় দেখছে না বিএনপি। তাই দলটি আন্দোলনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এজন্যই জাতীয় নির্বাচনের আগে যত স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে দলটি প্রতিটি নির্বাচনে অংশ নেবে।

দলের নেতারা মনে করেন, এই সরকার আদালতকে ব্যবহার করে ভিত্তিহীন একটি মামলায় দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি করেছে। কারান্তরীণ বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হলেও তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। রাজপথের শান্তিপূর্ণ কোনো কর্মসূচিও তাদের করতে দেয় না সরকার।

গত ১৫ মে খুলনা ও গত মঙ্গলবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব নির্বাচনে নানা অনিয়মের মাধ্যমে ধানের শীষের বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নির্বাচন কমিশনের সহযোগিতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে ক্ষমতাসীনরা কাজটি করেছে। গাজীপুর নির্বাচনের পর বুধবার গুলশানে ২০ দলীয় জোট ও আগের রাতে গুলশানে স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে গাজীপুর নিয়ে মূল্যায়ন করা হয়।

নেতারা বলেছেন, বর্তমান সরকারের পতন ছাড়া চলমান রাজনৈতিক সমস্যার কোনো সমাধান হবে না। এজন্য নিজের বিভেদ দূর করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে। তার আগে জনগণের কাছে যেতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা জনগণের ভোটাধিকার, মানবাধিকার সংরক্ষণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মুক্ত গণমাধ্যম ও সুশাসনের জন্য দীর্ঘকাল সংগ্রাম করছি। গণতন্ত্রের জন্য যিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন, জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে তিনবার প্রধানমন্ত্রীর পদ অলঙ্কৃত করেছেন এবং দুবার জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে কারাগারে আটক রেখে বাংলাদেশকে একটি স্বীকৃত স্বৈরাচারী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। সরকারের এই নিলর্জ্জ গণবিরোধী চরিত্র উন্মোচনের জন্য এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আমরা স্থানীয় সরকারগুলোতে অংশ নিচ্ছি আন্দোলনের অংশ হিসেবে। আসন্ন বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনগুলোতে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি একই কারণে।

তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে সরকারের প্রকৃত চেহারা উন্মোচন, নির্বাচন কমিশনের অযোগ্যতা ও পক্ষপাতিত্ব প্রমাণিত হচ্ছে এই নির্বাচনগুলোর মধ্য দিয়ে। আমরা বিশ্বাস করি, সব গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তির জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে গণবিরোধী স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠবে এবং ভোট ডাকাত গণবিরোধী এই সরকারকে পরাজিত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।

দলটির নেতারা মনে করেন, আসন্ন রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট নির্বাচনেও সরকার একই মডেলে ধানের শীষের বিজয় ছিনিয়ে নেবে। তাই জাতীয় নির্বাচনের আগে এই সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে অংশ নেবে বিএনপি। এতে দুই ধরনের লাভ হবে। একটি হচ্ছে, দলীয় সরকারের অধীনে যে কোনো নির্বাচন নিরপেক্ষ হয় না এটা তার একটি বড় প্রমাণ। দ্বিতীয় হচ্ছে, সংগঠনের শক্তি ও নেতাদের ভূমিকা সম্পর্কে জানা যায়। যা নিরপেক্ষ সরকার আন্দোলনের জন্য বড় ভূমিকা রাখবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সরকার একটি নির্বাচনী প্রকল্প নিয়েছে। সেটা হচ্ছে, একতরফা নির্বাচন। এটাকে আন্দোলনের মাধ্যমে ভেঙে দেওয়া হবে। সেজন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১১২৫ঘ.)