জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের বিশেষ ব্রিফ্রিং

রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির শেখ হাসিনার সমালোচনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাখ্যান

রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির শেখ হাসিনার সমালোচনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাখ্যান

জাতিসংঘ সংবাদদাতা

রাশিয়ার উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং অর্থনৈতিক নানা সংকটের কারণ- বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক এমন বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিনডা থমাস গ্রীনফিল্ড বলেছেন, "রাশিয়া বার বার একথা বলছে যে নিষেধাজ্ঞার কারণে মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। অন্য দেশ থেকেও কেউ একই কথা বলছেন।"

তিনি বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নয় বরং রাশিয়ার যুদ্ধই মানুষকে তীব্রভাবে ভুগাচ্ছে।"

মঙ্গলবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের উদ্যোগে আয়োজিত বিশেষ এক বিফ্রিংয়ে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনার জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরেন গ্রীনফিল্ড। রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের রেজুলেশনে ভোটাভোটির প্রাক্কালে বিশেষ এই বিফ্রিংয়ে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় জাতিসংঘ এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ করা কয়েকজন সাংবাদিককে।

বিফ্রিংয়ে অংশ নিয়ে জাতিসংঘ স্থায়ী সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, "আপনি ইতিমধ্যে ব্রিফ্রিংয়ে বলেছেন- এটা রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনো প্রতিযোগিতা নয়। এটা উদ্বেগের ন্যায় সংগত বিষয়। বিবেকবান সকলেই ইউক্রেনে রাশিয়ান আগ্রাসনের নিন্দা জানাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের কতৃর্ত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়ার ওপর দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করছেন। এটাকে তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে তুলনা দিয়েছেন। অথচ তিনিই বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছেন। তার এই সমালোচনার বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?"

জবাবে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূত বলেন, "আমরা খুব স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই মানবিক কোনো উদ্যোগ এবং শস্য পণ্য সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্র কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি।"

তিনি বলেন, "যে জিনিসটা মানুষকে ভুগাচ্ছে সেটা হলো ইউক্রেনের জনগণের ওপর রাশিয়ার আক্রমণাত্মক এবং অপ্রয়োজনীয় যুুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া।"

উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, "নিজেদের ব্যর্থতার কথা তারা বলে না। বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের মদদ দিলো। এখন আবার ইউক্রেন যুদ্ধে মদদ দিয়ে যাচ্ছে, স্যাংশন দিয়ে যাচ্ছে। স্যাংশন দিয়ে সব মানুষের ক্ষতি হচ্ছে।"

ব্রিফিংয়ে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে জাতিসংঘে প্রস্তাবিত রেজুলেশন নিয়ে সাংবাদিক মুশফিকুল জানতে চান, "যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘে যে রেজুলেশন আনতে চাচ্ছে তাকে দক্ষিণ এশিয়ার কেমন সমর্থন পাবে। আপনাদের যে মূল লক্ষ্য তাতে দক্ষিণ এশিয়ার কয়টি দেশকে পাশে পাবেন? আপনাদের প্রস্তাবের পক্ষে কয়টি দেশ ভোট দিবে বলে মনে করেন?"

জবাবে গ্রীনফিল্ড বলেন, "আমরা প্রত্যেকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আপনি এটার রেজাল্ট কালকেই জানবেন। এই রেজুলেশনকে পৃথিবীর সব অঞ্চল সাপোর্ট করবে এবং তা করার যুক্তি রয়েছে।"

তিনি বলেন, "আগামীকাল আমরা সবাই ভোট দেব। আমি মনে করি তাতে সবাই সমর্থন দেবে। কোন দেশে কোন বাটন চাপ দেবে তা আমরা মনিটরেই দেখতে পাবো। যদি কোনাে দেশ রাশিয়াকে সমর্থন দেয় তবে তাদের সংখ্যাটা হবে নগন্য।"

এমএস/