বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টের উদ্বেগ

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টের উদ্বেগ

মুশফিকুল ফজল আনসারী, স্টেট ডিপার্টমেন্ট সংবাদদাতা

বাংলাদেশে যখন স্বাধীন গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিস্থিতি সংকুচিত হয় তখনি উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। আর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মূল অবস্থান থেকেই এসব ইস্যুতে অবনতি ঘটলে উদ্বেগ জানানো হয় বলে উল্লেখ করেছে দেশটি।

এক যুগ ধরে গুম হওয়া ভিকটিম পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র রাষ্ট্রদূতের বৈঠকে সরকার সমর্থকদের বাধা এবং বিশৃঙ্খলা তৈরির অপচেষ্টায় জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের তরফ থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশের পর স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে একইভাবে অবস্থান থেকে একই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে।

বুধবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফ্রিংয়ে বাংলাদেশে বিরোধী দলের ওপর সরকারের অব্যাহত নিপীড়ন এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সাক্ষাতের সময় আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের বিশৃঙ্খলা তৈরি করা প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে দেশটির অবস্থান তুলে ধরতে গিয়ে নিজেদের উদ্বেগ পুর্নব্যক্ত করেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রধান উপসহকারি মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল।

ব্রিফ্রিংয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী বাংলাদেশে বিরোধী দলের ওপর সরকারের নিপীড়ন এবং চলমান বিভিন্ন ইস্যু উত্থাপন করে জানতে চান, "রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বুধবার সকালে গুম হওয়া বিরোধী দলের কর্মী সাজেদুল ইসলামের বাসা পরিদর্শনের সময় সেখানে বাধা তৈরি করে সরকার দলীয় সমর্থকরা। এ ঘটনার পরপরই পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রদূত। এছাড়া আপনি হয়তো দেখছেন যে, বাংলাদেশর সরকার বিরোধী দল নিপীড়নে বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে। বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে জেলে আটক করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে বাধা দেবার এই ঘটনা প্রথম ঘটনা নয়, এর আগেও ২০১৮ সালের ৬ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়ি বহরে আক্রমণ করেছিল সরকারপন্থী কর্মীরা। যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশও বাংলাদেশে সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে সরকার সমর্থকের হয়রানির শিকার হচ্ছে। এসব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য কি?"

জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র তার মূল্যবোধের ধারবাহিকতা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্বব্যাপী শান্তি, নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধির পূর্বশর্ত হিসেবে মানবাধিকারকে গুরুত্ব দেই আমরা।"

বাংলাদেশে যখন স্বাধীন গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিস্থিতি সংকুচিত হয় তখনি উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র বলে উল্লেখ করেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের এই মুখপাত্র।

তিনি বলেন, "আপনি একটি নির্দিষ্ট বৈঠকের কথা বলেছেন। ১৪ই ডিসেম্বর দিনের শুরুর বৈঠকটি নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে শেষ না করেই যুক্তরাষ্ট্র রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসের কর্মীদের স্থান ত্যাগ করতে হয়েছে। এ নিয়ে আমাদের শঙ্কা এবং উদ্বেগের বিষয়টি আমরা বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নজরে এনেছি।"

এমএন/