স্বামীর সাথে ঝগড়ার কারণেই সতীনের মেয়েকে হত্যা!

স্বামীর সাথে ঝগড়ার কারণেই সতীনের মেয়েকে হত্যা!

শাশুড়িকে মারধরের ঘটনায় স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হয় গৃহবধূ সালমা বেগমের। এর ক্ষোভ থেকে সতিনের মেয়ে মাহা বেগমকে (৫) নদীতে ফেলে হত্যা করেন ওই নারী। হত্যার পর স্থানীয় জনতা তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

শুক্রবার বিকালে বাবার বাড়ি যাওয়ার কৌশলে সতিনের দ্বিতীয় মেয়ে মাহাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন সালমা। পথে টুকেরবাজার সুরমা নদীতে সেতুর ওপর উঠে মাহাকে নদীতে ফেলে দেন। অথচ রাহা নামে তারও দু’বছরের একটি সন্তান রয়েছে বলেন তিনি। মাহা সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ থানা এলাকার ফতেহপুর গ্রামের জিয়াউল হকের মেয়ে এবং সালমা তার দ্বিতীয় স্ত্রী।

আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে নিজের ক্ষোভের কথা জানিয়ে সালমা বলেন, শাশুড়িকে মারধর করায় স্বামীর সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। এরই জের ধরে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে ওঠেন তিনি। তবে তিনি মাহাকে হত্যা করতে চাননি। সে নাকি সেতুর রেলিংয়ে বসতে চেয়েছিল। তাই তিনি শিশু মাহাকে রেলিংয়ে বসালে সে নদীতে পড়ে যায়।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সালমা বলেন, প্রায় সাড়ে ৪ বছর আগে জিয়াউল হকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তার দু’বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। শাশুড়িকে মারার অপরাধে স্বামীর সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সতিনের মেয়েকে হত্যার উদ্দেশে নদীতে ফেলে দেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভাবের সংসার জিয়াউল হকের। যখন যা পান তিনি তখন তাই করেন। কখনো মাছ ধরেন, কখনো রিকশা চালান। এ কারণে সাড়ে চার বছর আগে তার দু’সন্তান রেখে সাবেক স্ত্রী অন্যখানে বিয়ে করেন। এরপর সালমা বেগমকে বিয়ে করেন। এখন তার তিন মেয়ে রয়েছে। সাবেক স্ত্রীর দুই সন্তান মারিয়া (৯) ও মাহা (৫) ও বর্তমান স্ত্রীর এক সন্তান রাহা (২)।

এ ব্যাপারে সালমার স্বামী জিয়াউল হক বলেন, এইদিন দুপুরে সালমার আচার-আচরণের বিষয়টি জানাতে স্থানীয় উজান মীরের গাঁও শ্বশুরবাড়িতে বিচার দিতে যান। সেখানে অবস্থানরত অবস্থায় মেয়েকে নদীতে ফেলার বিষয়টি জানতে পারেন।

তিনি বলেন, সাবেক স্ত্রী চলে যাওয়ার পর সালমার সঙ্গে তার তিন বছরের সংসার। ঘরে বড় মেয়ে মারিয়াকে রেখে মাহাকে নিয়ে বের হন তার স্ত্রী। পথিমধ্যে নদীতে ফেলে তাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তিনি মামলা দায়ের করবেন বলেও জানান।

মহানগরীর জালালাবাদ থানার ওসি ওকিল উদ্দিন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সালমা জানায়, তখন তিনি সেতুর মাঝখানে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। হত্যার ঘটনা স্বীকার না করলেও শিশুটিকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ব্রিজের রেলিংয়ে বসিয়েছিল ওই নারী। কেননা ৫ বছরের শিশু রেলিংয়ে উঠে বসার কথা না। এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা হত্যা মামলা দায়ের করবেন। ঘটনার পর দমকল বাহিনীর চার সদস্যের ডুবুরিরা অনেক খোঁজাখুজি করেছেন। কিন্তু শিশুটির কোনো সন্ধান পায়নি।

তাছাড়া শিশুটিকে নদীতে ফেলার দৃশ্যটি দেখতে পেয়েই প্রত্যক্ষদর্শী এক তরুণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাৎক্ষণিক ব্রিজ থেকে লাফিয়ে নদীতে পড়ে অল্পের জন্য উদ্ধারে ব্যর্থ হয়। ভরা সুরমায় প্রবল স্রোতে শিশুটি তাৎক্ষণিক নদীগর্ভে তলিয়ে যায়।

এমআই