নেপালী জাতের কলা চাষে কৃষকদের ভাগ্য বদল

নেপালী জাতের কলা চাষে কৃষকদের ভাগ্য বদল

ঢাকা, ২১ অক্টোবর (জাস্ট নিউজ) : সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট উপজেলায় ধান চাষের পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে কলা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। আবহাওয়া ও মাটি চাষাবাদের উপযোগী হওয়ায় ছোট-বড় মিলে প্রায় শতাধিক কলার বাগান গড়ে উঠেছে। উৎপাদন ভালো হওয়ায় কলা চাষির সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর ৪০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ করা হয়েছে। যা গতবছরের তুলনায় ১০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ বেড়েছে। উপজেলার ধারা ইউনিয়নের বাড়ইগাঁও, মকিমপুর নগুয়া, মাঝিয়াইল, টিকুরিয়া গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে কলা চাষাবাদের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। ফলন ভালো ও রোগের আক্রমণ কম হওয়ায় কৃষকরা এবার নেপালী জাতের কলা বেশি চাষ করছেন যা বাজারে সাগর কলা নামে পরিচিত।

স্থানীয় কলা চাষিরা জানান, প্রথম অবস্থায় বাড়ির আঙ্গিনা, ভরাট জমি ও খোলা জায়গায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ে কলা বাগান করা হত। এখন প্রতি আমন মৌসুমে ধান চাষের বিপরীতে কম খরচে সুবিধাজনক উপায়ে কলা চাষ হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে সঠিক পরিচর্যা ও রোগবালাই থেকে মুক্ত রাখতে পারলে প্রতি এক একর জমিতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা বিক্রয় করা সম্ভব।

কলার কাঁদি আসার সময় থেকে স্থানীয় পাইকারদের আনাগোনা বেড়ে যায়। ফলে হাট ছাড়াই সরাসরি কৃষক থেকে পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা কলা ক্রয় করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এভাবেই বিভিন্ন এলাকায় কলা চাষ বেড়ে গেছে। কলা চাষে উৎসাহিত করতে কৃষি ঋণ ও কৃষি অফিস থেকে কলা চাষের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়ার দাবি স্থানীয় কৃষকদের।

এ বিষয়ে মকিমপুর গ্রামের কলা চাষি আকবর আলী জানান, ধান চাষের পাশাপাশি কলা চাষ লাভজনক হওয়ায় প্রতি বৎসর নেপালী জাতের সাগর কলা চাষ করছি। বর্তমানে বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে কলা চাষ। বাজারে প্রচুর পরিমাণে চাহিদা থাকায় এলাকার অধিকাংশ কৃষক কলা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

কলা আড়ৎদার রফিকুল ইসলাম বলেন, দেশি কলার চেয়ে দামে কম হওয়ায় চাহিদা একটু বেশি। এ বৎসর প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার কলা বাগান অগ্রিম ক্রয় করেছি। স্থানীয় বাজারে চাহিদা মেটানোর পরও আশে-পাশের বাজারে খুচরা ব্যবসায়ীরা কলা কিনতে ভিড় করছেন প্রতিদিন। স্থানীয় ভোক্তাদের মাঝে ক্যামিক্যাল মুক্ত প্রাকৃতিক উপায়ে কলা বিক্রয় করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সুলতান আহম্মদ জানান, কৃষকদের নিজ উদ্যোগে কলা চাষাবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যে কলা চাষাবাদের এলাকাসমূহে মাঠ পর্যায়ে কৃষি উপ-সহকারীরা নিয়মিত মনিটরিং করছেন। কলা চাষের বিষয়ে যে কোন পরামর্শ ও সহযোগিতা সবসময় অব্যহত থাকবে।

(জাস্ট নিউজ/এমজে/১৫৩০ঘ.)