সরকার নতুন নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে : রিজভী

সরকার নতুন নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে : রিজভী

ঢাকা, ১৯ আগস্ট (জাস্ট নিউজ) : ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে নির্বাসনে পাঠিয়ে এখন আগামী নির্বাচন নিয়ে অবৈধ সরকার নতুন নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী । তিনি আরো বলেন, আওয়ামী অপশাসনের ছোবলে শুধু দেশের জনগণই নয় দেশ-বিদেশে সমর্থন হারিয়ে এতিম হয়ে আওয়ামী নেতারা পাগলের প্রলাপ বকছেন। তাদের বক্তব্য, বিবৃতি সামঞ্জস্যহীন। মসনদ হারানোর ভয়ে তারা মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছে।’

রবিবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন তাড়াহুড়ো করে দেড় লাখ ইলেকট্রনিক্স ভোটিং মেশিন (ইভিএম মেশিন) কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। ক্রয় ও সংরক্ষণের জন্য এ প্রকল্পের ব্যয় হবে ৩৮২১ কোটি ৪০ লাখ ৬০ হাজার টাকা। অথচ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসির সাথে সংলাপে আওয়ামী লীগ ছাড়া প্রায় সব রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, পেশাজীবী সংগঠন ইভিএমের বিপক্ষে মত দিয়েছে। এমনকি প্রধান নির্বাচন কমিশনারও একাধিকবার বলেছেন সবাই না চাইলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে না।’

রিজভী বলেন, ‘সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ব্যক্তির গণমাধ্যমে জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্য জনগণের নিকট অঙ্গিকারনামার মতো বিবেচিত হয়। কিন্তু প্রতিশ্রুতির বক্তব্য থেকে সরে গিয়ে সিইসি বিপুল টাকার অংকে দেড় লক্ষ ইভিএম মেশিন ক্রয় করার উদ্যেগ নিচ্ছেন। একই সঙ্গে কমিশনের সচিব বলেছেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ সংশোধন করে ইভিএম ব্যবহারের বিধান অন্তর্ভুক্তির ইঙ্গিত দিয়েছেন-যা সম্পূর্ণভাবে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা।’

আগামী নির্বাচনকে ক্ষমতাসীনদের অনুকূলে ম্যানিপুলেট করার জন্য ইভিএম ব্যবহার প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনের সচিবের যৌথ প্রযোজনার অংশ বলে মন্তব্য করে রিজভী।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘ইভিএম মানেই ত্রুটিযুক্ত নির্বাচন। ইভিএম দিয়ে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ইভিএমে সাধারণ মানুষের আস্থা নেই। এ মেশিন দ্বারা ডিজিটাল কারচুপি হওয়া সম্ভব। ইভিএম সম্পর্কে এর আগে বিস্তারিত আমরা জানিয়েছি। আগামী নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী সরকারকে পুনরায় ক্ষমতায় বসানোর জন্যে বিতর্কিত ইভিএম ব্যবহারের পাঁয়তারা করছে সিইসি ও কমিশনের সচিব।’

রিজভী আহমেদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের আগেই এ সরকারের পতন হবে- এমন আলামত দেখে দেশব্যাপী মিথ্যা মামলার ছড়াছড়ি আর নির্বিচারে গ্রেপ্তারের হিড়িক শুরু হয়েছে। ঈদের প্রাক্কালেও দেশজুড়ে গণগ্রেপ্তারের অবিরাম অভিযান চলছে- গ্রেফতার করা হচ্ছে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা, জনপ্রতিনিধিসহ হাজানো কর্মীদের। মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারের যাতাকলে দেশবাসীকে অন্ধকার দম আটকানো অবস্থায় ফেলা হয়েছে। যাতে জনগণের প্রতিবাদী মিছিল রাজপথে এগিয়ে যেতে না পারে।’

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সরকার শেষ মরণকামড় দিচ্ছে। কিন্তু তাদের সময় পার হয়ে গেছে। শেখ হাসিনার অধীনে আগামী নির্বাচন হবে না। আগামী নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। এবার গায়ের জোর খাটিয়ে কোনও লাভ হবে না। যতই জেল-জুলুম-নির্যাতনের পথ বেছে নিন কোনও অ্যান্টিবায়োটিকই আপনাদের টিকাতে পারবে না। বর্তমান আওয়ামী সরকার যুক্তি ও বিবেকবর্জিত, নৈরাজ্যকারী। এদের পতন অনিবার্য ও অত্যাসন্ন।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/১৯০০ঘ.)