প্রতিদিন কমছে দানের দাম, বাড়ছে কৃষকের হতাশা

প্রতিদিন কমছে দানের দাম, বাড়ছে কৃষকের হতাশা

সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চলে শনিবার ধানের দাম আরো কমেছে। জেলার সবচাইতে বড় ধানের আড়ত মধ্যনগরে গত দুই দিনের ব্যবধানে মণপ্রতি ৫০ টাকা কমেছে ধানের দাম। জেলার দিরাই-শাল্লায়ও ধানের দাম কমেছে। অন্যদিকে, জেলায় সামান্য পরিমাণে যে ধান সরকার ক্রয় করবে, সেটিও এখনও কেনা শুরু হয়নি। এ অবস্থায় কৃষকদের মধ্যে হতাশা কেবলই বাড়ছে। কৃষকরা জরুরি প্রয়োজনে গরু, ছাগল বিক্রি করছেন। একেবারে বিপদ ছাড়া কেউ ধান বিক্রি করছেন না।

জেলার শাল্লা উপজেলায় শনিবার ধান বিক্রি হয়েছে মোটা ৪৫০ টাকা এবং চিকন ৫৫০ টাকা মণ। অথচ তিন দিন আগেও মোটা ৫৫০ এবং চিকন ৬০০ টাকায় বিক্রয় হয়েছে।

শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামের বড় গৃহস্থ মাখনলাল দাস বলেন, মোটা ধান দুদিন আগেও সাড়ে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, শনিবার একই ধান সাড়ে ৪শ’ টাকার ওপরে কেউ বিক্রয় করতে পারেননি। স্থানীয় আড়তদাররা ময়ালে (ভৈরব ও আশুগঞ্জে) দাম কমার কথা বলছে।

এ উপজেলার আনন্দপুর গ্রামের কৃষক রঞ্জন দাস বলেন, ‘দাম খালি কমের, এর লাগি কেউ ধান বেচের (বিক্রয়) না। জরুরি কাজে মাইনসে গরু-ছাগল বিক্রি করতাছে।’

তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশার বেশিরভাগ ধান যায় মধ্যনগরের আড়তে। ওখানে বৃহস্পতিবার বি-আর ২৯ ধান আড়তদাররা কিনেছে ৬৫০ থেকে ৬৬০ টাকায়। শনিবার একই ধান বিক্রয় হয় ৬০০ টাকায়। বি-আর ২৮ ধানের দামও মণপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে।

মধ্যনগর ধানের আড়তদার সমিতির সভাপতি জ্যোতির্ময় রায় বলেন, ‘গত বছর এই দিনে দিনে ৫শ’ থেকে ৭শ’ মণ ধান কেনা হয়েছে। আজ শনিবার (গতকাল) মধ্যনগর আড়তদারদের সকলে মিলেও ১০০ মণ ধান কিনেনি।’

ধানের দাম বাড়বে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে জ্যোতির্ময় রায় বলেন, ‘ধানের দাম বাড়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। আশপাশের ধানের আড়তে এমনকি ভৈরব-আশুগঞ্জে ধানের দাম আরও কম।’ মধ্যনগরের ধানের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন, এমন অভিযোগও আছে কৃষক নেতাদের।

কৃষক সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল বাশার ঠাকুর খান বলেন, ‘ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত সিন্ডিকেট। ধানের দাম ভৈরব-আশগঞ্জসহ বড় আড়তে কমলে আরো কমিয়ে কায়দা করে স্থানীয়রা। আর বাড়লে তারা বাড়াতে চায় না।’

জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া মোস্তফা বলেন, ‘জেলাব্যাপী কৃষক নির্বাচন হচ্ছে, আগামী সপ্তাহ থেকে সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু হবে।’

এমআই