কাশ্মীর: ভারতের দাবি মিথ্য প্রমাণ করছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম

কাশ্মীর: ভারতের দাবি মিথ্য প্রমাণ করছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম

অবরুদ্ধ, বিভ্রান্ত, সন্ত্রস্ত, ক্রুদ্ধ। ভারতের মোদি সরকারের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করার সিদ্ধান্তের পরে কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের মানসিক অবস্থা বোঝাতে এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

৯ ও ১০ অগস্ট নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত দু’টি প্রতিবেদনে কাশ্মীরের ‘বর্তমান পরিস্থিতি’ তুলে ধরা হয়েছে। প্রথম দিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এক সপ্তাহ ধরে কাশ্মীর উপত্যকাটিকে কার্যত গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। হাজার হাজার ভারতীয় সেনা রাস্তা আটকে, স্কুল-কলেজ বন্ধ করে, সাধারণ মানুষের বাড়ির ছাদ দখল করে নিয়েছে। ইন্টারনেট, মোবাইল ও ল্যান্ডলাইন বন্ধ, ফলে বাইরের দুনিয়ায় যোগাযোগের কোনো উপায় নেই।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে,‘ভারত সরকারের দাবি, এই পদক্ষেপগুলো এলাকার আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য জরুরি। মানবাধিকার কর্মীরা অবশ্য এর সঙ্গে বন্দিদশার তুলনা করছেন!’

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদপত্রটির মতোই ব্রিটিশ চ্যানেল বিবিসি-ও দাবি করেছে যে, বিক্ষোভ সামলাতে গুলি বা ছররা ছুড়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ৯ অগস্ট একটি ভিডিও সম্প্রচার করে বিবিসি। তাতে দেখা যাচ্ছে, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ছররা ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছে সেনা। ছররা চালানোর শব্দও পাওয়া যাচ্ছে। ভিডিয়োটি সে দিনই শ্রীনগরে তোলা হয়েছে বলে দাবি করেছে ব্রিটিশ চ্যানেলটি। নিউ ইয়র্ক টাইমসও দাবি করেছে, প্রতিবাদকারীদের ধারে-কাছে ঘেঁষতে না দিলেও তাদের সাংবাদিকরাও ছররা চালানোর শব্দ শুনতে পেয়েছেন।

সাংবাদিকদের শ্রীনগরে ঢোকার উপরে বিধিনিষেধ থাকলেও কোনো ভাবে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের কিছু প্রতিনিধি শ্রীনগরে ঢুকে পড়তে পেরেছেন বলে দাবি করেছে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। নিউ ইয়র্ক টাইমস ছাড়া রয়েছেন রয়টার্স ও এএফপি-র চিত্র সাংবাদিকেরা। তাদের তোলা ছবিতে বিক্ষোভের নানা মুহূর্ত উঠে এসেছে। ধরা পড়েছে ‘ছররা ও পদপিষ্ট হয়ে জখমদের’ ছবিও। শ্রীনগরের হাসপাতালে যন্ত্রণাক্লিষ্ট কিশোরী, ১৪ বছরের আফসানা ফারুকের ছবি ছেপে নিউ ইয়র্ক টাইমস দাবি করেছে, শ্রীনগরে কাশ্মীরিদের একটি বিক্ষোভ-সমাবেশের উপরে সেনাবাহিনী ছররা চালাতে শুরু করলে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয় কিশোরীটি।

রয়টার্স, বিবিসি ও নিউ ইয়র্ক টাইমসের এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে কালই বিবৃতি জারি করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আজ সেই অভিযোগ খণ্ডন করে টুইট করেছে বিবিসি। তাদের কথায়, ‘কাশ্মীরে যা হচ্ছে আমরা তার ভ্রান্ত ধারণা তুলে ধরছি-এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমরা নিরপেক্ষ ও সঠিক ভাবে পরিস্থিতি তুলে ধরছি। আমরাও উপত্যকায় যথেষ্ট বাধ্যবাধকতার মধ্যে কাজ করছি। আসলে কী ঘটে চলেছে, তা আমরা দেখিয়েই যাব।’সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।